ঢাকা, শনিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২৮ জিলহজ ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

‘জঙ্গিবাদী চক্রান্তে সরকার হটানো যাবে না’

জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
‘জঙ্গিবাদী চক্রান্তে সরকার হটানো যাবে না’ সম্মেলনের অতিথিরা। ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: দেশে জঙ্গিবাদী চক্রান্ত করে সরকারকে হটানোর যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা কখনোই সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে ক্রমাগত জঙ্গিবাদী চক্রান্ত চলছে।

গত সপ্তাহে সিলেটে সেনাবাহিনী জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান চালিয়েছে। মৌলভীবাজারের দুই জায়গায়ও জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পাওয়া গেছে। সাম্প্রদfয়িক গোষ্ঠীর কয়েকটি চক্র এ কার্যক্রম চালিয়ে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে। তবে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যরা তাদের সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করছেন’।

‘কোনোভাবেই এ দেশে জঙ্গিবাদী চক্রান্ত করে সরকারকে হটানো যাবে না’।

দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে ছাত্রলীগ বড় ভূমিকা রাখতে পারবে উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আজ ছাত্রলীগের দায়িত্ব। এ ইস্যুতে সারা দেশের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে’।

ছাত্রলীগ থেকেই আগামীতে আওয়ামী লীগের বড় পদে রাজনীতি করার সুযোগ আসবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তোমরা যারা ছাত্রলীগ করছো, তাদের মধ্য থেকেই আগামীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতার জন্ম হবে। তারাই আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিচালিত করবেন’।

প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের‘আমি তার বড় প্রমাণ। কারণ, আমি নিজে ছাত্রলীগ নেতা থেকেই আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি’।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, সত্তরের দশকে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) সকল আন্দোলনের আঁতুড়ঘর ছিল এবং এখান থেকেই সকল আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘এক সময় দেশের স্বার্থে যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে সবার আগে জগন্নাথে ডাক আসতো ছাত্রলীগের কাছ থেকে। সত্তরের আগে আমরা এ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ থেকে ছাত্রলীগের নেতারা আন্দোলনের ডাক না দিলে কোনো আন্দোলন হতো না। আন্দোলনের আঁতুড়ঘর ছিল এই জগন্নাথ’।

জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে ছাত্রলীগকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে উল্লেখ করে রাজু বলেন, ‘জঙ্গিবাদের প্রশ্নে তাই সবার আগে ছাত্রলীগকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, ছাত্রলীগসহ সকল পর্যায়ের মানুষকে এর বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে’।

জগন্নাথের স্বর্ণালী অতীতের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যা করতে পারেনি, সে সময়ে তাই করে দেখিয়েছি আমরা। আমরা যাওয়ার পর যারা ছিলেন, তারাও একইভাবে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তাই যারা জবি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে আসবেন, তাদের অবশ্যই শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশের যেকোনো বিপদে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে’।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন দেশের সকল ছাত্রলীগ কর্মী যখন নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হবেন, তখনই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সার্থক ও সফল হবে বলে মন্তব্য করেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা বলেন, ‘প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে প্রতিষ্ঠিত হলেই আমাদের প্রকৃত বিজয় আসবে। দেশের প্রত্যেক ছাত্রলীগ কর্মী যখন একেকজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ হবেন, তখন সার্থক হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মনে রাখতে হবে, আগে নিজেকে সফল করতে হবে, তারপর সবকিছু। প্রয়োজনে সকল অপসংস্কৃতি গুঁড়িয়ে মুচড়িয়ে দিয়ে, আমাদের আবার নতুন করে শুরু করতে হবে’।

তিনি আরো বলেন, ‘দারিদ্র্যসীমা অতিক্রম করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারলেই জঙ্গির কবল থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। জঙ্গিবাদের আসল উদ্দেশ্য, এদেশের মানুষকে আর মেধা শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ যখন দারিদ্র্যসীমা পেরিয়ে যাবেন, তখনই সম্ভব হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া’।

ছাত্রলীগের কর্মীদের আগে নিজেকে সচেতন ও বদলানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়শই দেখতে পাই, বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রলীগের কর্মীরা নেতাদের প্রটোকল দিতে গিয়ে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি করেন। এ যানজটের মাঝে অনেক অসুস্থ রোগী, বয়স্ক মানুষ, গুরুত্বপূর্ণ কাজে বের হওয়া লোকেরা থাকেন। ছাত্রলীগ কর্মীদের এসব থেকে বের হতে হবে। আগে নিজেকে বদলাতে হবে, তাহলেই বদলে যাবে দেশ’।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।

বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনজবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলাম।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গনে জাতীয় ও দলীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
ডিআর/ জিপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।