ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাহরাইন

বাঙালি গলিতে চিতই পিঠার উৎসব

মোসাদ্দেক হোসেন সাইফুল, বাহরাইন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
বাঙালি গলিতে চিতই পিঠার উৎসব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মানামা: মানামা বাঙালি গলির কিউই রেস্টুরেন্টের পাশে মসজিদের গলিতে কেরোসিনের চুলায় ছোট লোহার কড়াইয়ে পিঠা তৈরি করছেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগরের মজনু ও কসবার জসিম এবং কুমিল্লার মদনগঞ্জের বাশার মিয়া। প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে তাদের চিতই পিঠা তৈরির যজ্ঞ।


এই চিতই পিঠা তৈরি হয় চালের গুড়ো দিয়ে। পরিচিত কোল্ড স্টোর (মুদি দোকান) চালের গুঁড়া সরবরাহ করে। এক কেজি চালের গুঁড়ায় ১২/১৪ টি পিঠা তৈরি করা যায়। প্রতিটি পিঠা বিক্রি হয় ১০০ ফিলসে (২০ টাকা)। রয়েছে পার্সেল সার্ভিসও। বাংলাদেশিরাই এ পিঠার মূল ক্রেতা, তবে মাঝে মধ্যে ভারতীয়রা আসে বলে জানান দোকানিরা।

গরম পিঠার সাথে রয়েছে শুটকি, ধনিয়া ও শরিষা ভর্তা। ক্রেতারা যে যার পছন্দ ও পরিমাণমত  ভর্তা প্লেটে তুলে নেন।

বিশেষ ধরনের লোহার খুনতি দিয়ে কড়াই থেকে গরম পিঠা তুলতে তুলতে মজনু বলেন,  আমিই প্রথম এখানে এই পিঠা চালু করি।

কিন্তু তার দোকানের সামনে দাঁড়ানোর জায়গা কম থাকায় পাশের দোকানে ক্রেতা বেশী বলে আক্ষেপ করেন মজনু।

চালের গুঁড়ার সঙ্গে পরিমাণমতো পানি ও লবণ মাখিয়ে তরল মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এরপর চায়ের কাপের মত কাপে করে তুলে কড়াইয়ে দিলে মৃদু আঁচে ১/২ মিনিটেই তৈরি হয়ে যায় গরম গরম চিতই পিঠা। দৈনিক ১২/১৫ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করেন মজনু।

তারই পাশের দোকান কুমিল্লার মদনগঞ্জের বাশার মিয়া, একের পর এক গরম গরম পিঠা তুলে ক্রেতাদের প্লেটে দিচ্ছেন।

বাশার মিয়া জানান, শীত এলে তিনি এ কাজ করেন এবং অন্য সময়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। বিকেল থেকে বেচাবিক্রি করলেও ভর্তার সরঞ্জাম সংগ্রহ  ও তৈরি করতে করতে দিন বয়ে যায় বলেন বাশার মিয়া। দৈনিক ১৫/২০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করেন বাশার মিয়া।

সবার চেয়ে বেশী ক্রেতার ভিড় দেখা গেল ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবার জসিমের দোকানে। রাস্তার এক পাশে তুলনামূলক জায়গা বেশী থাকার কারণে তার দোকানে বেচাকেনা বেশী। একজন কর্মচারীসহ পিঠা তৈরিতে সদাব্যস্ত জসিম মিয়া।

জানালেন দৈনিক ৩০/৩৫ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। আজ একজন ক্রেতা ৬০টি পিঠা পার্সেল নিয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্য দিনের কিছুক্ষণ আগেই তার বিক্রি শেষ। খরচাপাতি বাদে প্রতিদিন ১০/১৫ দিনার (১ দিনার ২০৬ টাকা) আয় হয় বলে জানান তিনি।

বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিঠা খেতে আসা গাজীপুরের আইয়ুবুর রহমান আকাশ বলেন, শীতকালে মায়ের হাতের পিঠা অনেক পছন্দের ছিলো, এখানে ওই রকম স্বাদ না হলেও খেয়ে তৃপ্তি পাচ্ছি।

ব্রাক্ষণবাড়িয়ার  আল আমিন ও হোসেন বলেন, প্রতিদিন কাজ শেষে ঘরে ফেরার পথে শুটকি ও শরিষা ভর্তা দিয়ে গরম পিঠা খেতে আসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাহরাইন এর সর্বশেষ