ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

২০১৭ সালে সাড়ে ১৬ লাখ ব্যাংক হিসাব বন্ধ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
২০১৭ সালে সাড়ে ১৬ লাখ ব্যাংক হিসাব বন্ধ বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা

ঢাকা: ২০১৪ সালে মোট গ্রাহকের ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ অসন্তুষ্ট হয়ে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়। ২০১৫ সালে এ ধরনের গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৮১টি ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে অসন্তুষ্টিজনিত কারণে। যা দেশের মোট ব্যাংক হিসাবের সাড়ে ১২ শতাংশ।

 

বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ মে) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘সাস্টেনেবলিটি ইন সার্ভিস কোয়ালিটি অ্যান্ড কাস্টমার্স কনফর্মিটি: ড্রাইভার্স অব কাস্টমার্স লয়্যালিটি টু ব্যাংকস’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।  

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএম’র সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গবেষণা দলে আরও ছিলেন বিআইবিএম’র সহকারী অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন, বিআইবিএম’র প্রভাষক লামিয়া রহমান, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অ্যাক্টিং হেড অব রিটেইল এম খোরশেদ আনোয়ার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এবং কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জহির হোসেন।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, প্রতিবছর গ্রাহকরা ব্যাংক হিসাব বন্ধ করলেও ৫৬ শতাংশ ব্যাংকে এ বিষয়ে গ্রাহকদের কোনো সাক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এমনকি বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব ব্যাংক হিসাবধারীর কোনো রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হয় না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলেকে ব্যাংকিংসেবায় গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা দিতে হবে। একই সঙ্গে কেন ব্যাংক হিসাব বন্ধ হচ্ছে তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিআইবিএম’র চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, অর্থনীতিতে গ্রাহক সন্তুষ্টি সাফল্য অর্জনের অন্যতম নিয়ামক। ব্যাংকিং খাতেও ভালো পণ্যের সঙ্গে ভালো সেবা প্রদান করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম’র সাবেক চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণেই ব্যাংকিং খাতে কর্মীদের কিছু সৌজন্যতা শিখিয়ে দিতে হবে। সম্প্রতি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ গ্রাহকদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করেন না। ব্যাংকারদের গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে হবে। একজন ভালো ব্যাংকার হবেন একজন ভালো জনসংযোগ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, ব্যাংকিং খাতের গ্রাহকদের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকের কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। গ্রাহকদের মধ্যে ক্যাটাগরি করে পরিকল্পনা করলে সেটি ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে।  

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কোনো অভিযোগ আসলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় বলে জানান তিনি।  

ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক মঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং দ্রুত সেবা দেয়ার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, যে ব্যাংকের কৌশল যত উন্নত তারা বেশি মুনাফা করে। গ্রাহককে উত্তম সেবা দিয়েই কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।