ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

এসেছে পাঠক, উড়েছে ধুলা, জমেছে মেলা

আদিত্য আরাফাত, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫
এসেছে পাঠক, উড়েছে ধুলা, জমেছে মেলা ছবি: জিএম মুজিবুর/ বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

গ্রন্থমেলা থেকে: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলায় প্রবেশ করতেই দেখা মেলে কয়েকজন মুখোশ (মাস্ক) বিক্রেতার। ভেতরে ধুলাবালির ওড়াউড়ি তাই বাইরে জমজমাট মাস্কের ব্যবসা।



এ বছরের মেলার আয়ু যখন শেষদিকে, তখন ধুলোয় ধূসর করে দিচ্ছে যেন অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ। মেলার বাইরে মাস্কের রমরমা ব্যবসাই বলে দিচ্ছে ভেতরে ধুলোর চিত্র।

সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রবেশ করতেই মাস্ক দিয়েই প্রবেশ করতে হয়েছে। যারা মাস্ক নেননি তাদের অনেককেই হাত দিয়ে নাক-মুখ চেপে বই কিনতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্টলের যারা বিক্রয়কর্মী তাদের মুখেও দেখা গেছে মাস্ক।

বেশিরভাগ পাঠক শেষদিকে এসে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে বই কিনতে চান। মেলার শেষদিকে এখন যারা বই কিনছেন তাদের এখন অস্বস্তিকর পরিবেশে বই কিনতে হচ্ছে।

বিকেলে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কথা হয় বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা নিলুফার জাহানের সঙ্গে। এক হাতে পার্স। অন্য হাতে বইয়ের ব্যাগ। মুখে মাস্ক। হাটতে হাটতে মেলার পরিবেশ নিয়ে কথা উঠতেই বললেন, ‘মেলার প্রথম সপ্তাহে একবার এসেছিলাম ঘুরতে। তখন ধুলোবালির এ চিত্র দেখা যায়নি। আজকে (সোমবার) মেলায় এসেছি বই কিনতে। ’

ধুলোর কারণে সোমবারের মেলার পরিবেশ তার কাছে অস্বস্তিকর লেগেছে বলে জানান।

কয়েকজন প্রকাশক জানিয়েছেন, মেলার শুরুর দিকে বইমেলায় পর্যাপ্ত পানি ছিটানো হলেও এখন নিয়মকরে ছিটাতে দেখা যাচ্ছে না। লোক সমাগম বেশি আসায় এখন ধুলোবালিও বেশি উড়ছে।

ধুলোবালি যাই উড়ুক সোমবার মেলার মাঠে বই বিক্রিও কম হয়নি। এসেছেন পাঠক। পছন্দমতো কিনে নিয়েছেন বই।

ভাষাপ্রকাশ-কাব্যমালাঞ্জলি পুরস্কার ঘোষণা
সোমবার বিকেলে তৃতীয় ভাষাপ্রকাশ-কাব্যমালাঞ্জলি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। পুরস্কৃত হয়েছেন- প্রবন্ধে সাদাত উল্লাহ খান, কথাসাহিত্যে শহিদুল আলম, কবিতায় শামসউজজোহা, ছড়ায় আনজীর লিটন, আবৃত্তিতে শিরিনা বিথী, প্রচ্ছদে চারু পিন্টু ও মোস্তাফিজ কারিগর, কবিতাপত্রে বদরুল হায়দার, কবিতা ম্যাগাজিনে মনির ইউসুফ, লিটল ম্যাগাজিনে প্রতিবুদ্ধিজীবী সম্পাদক সাদাত উল্লাহ খান ও প্রকাশনায় ম্যাগনাম ওপাসের আনোয়ার ফরিদী।

৯৯ বই
অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৩তম দিনে মোট ৯৯টি নতুন বই এসেছে। এরমধ্যে উপন্যাস ১৭টি, গল্পের বই ১৪টি, প্রবন্ধের বই ৪টি, কবিতার বই ৩৪টি, গবেষণামূলক বই ৪টি, ছড়ার বই ১টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ৫টি, নাটক ২টি, বিজ্ঞান বিষয়ক বই ১টি, ভ্রমণকাহিনী ২টি, ইতিহাস বিষয়ক বই ৩টি, রম্য একটি, সায়েন্স ফিকশন ১টি এবং অন্যান্য বিষয়ের বই ৯টি।

উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে, কবি প্রকাশনী থেকে মিহির সেনগুপ্তের ‘সিদ্ধি গঞ্জের মোকাম’, রেজাউদ্দিন স্টালিনের ‘প্রশ্নের পুরান’, বাঙলায়ন থেকে ফজলুল কবিরীর গল্পগ্রন্থ ‘বারুদের মুখোশ’, সমাবেশ থেকে সোহরাব পাশার ‘তোমার জন্য সকল আঁধার’, কবি প্রকাশনী থেকে তুষার প্রসূনের ‘হাড়ের কোরিওগ্রাফি’ প্রভৃতি।

এদিন বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে মোট ১১টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে।

মূলমঞ্চের আয়োজন
বিকেল ৪টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘সবুজপত্রের শতবর্ষ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবুল মোমেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. ইসরাইল খান এবং আবদুল আলীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক গোলাম মুরশিদ। সন্ধ্যায় একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মঙ্গলবারের আয়োজন
এদিন মেলার দুয়ার খুলবে বিকেল ৩টায়। চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলাদেশের লোকজ-সংস্কৃতি গ্রন্থমালা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক মাহবুবুল হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায়, গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়া, মুহম্মদ শহীদ উজ জামান, মির্জা তাসলিমা সুলতানা এবং মাহবুবা নাসরীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস এনডিসি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫

** হাবীব ইমনের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

** ‘তন্দ্রাচ্ছন্ন মূল্যবোধ, বইয়ের আলোয় জাগ্রত হোক’

** মেলায় তানভীর সুমনের ‘বয়স যখন একুশ’
** মেলায় এম. উমর ফারুকের ‘মেঘে ঢাকা চাঁদ’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।