ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

সময় বেড়েছে, পাল্টেনি চিত্র

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫
সময় বেড়েছে, পাল্টেনি চিত্র ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: দুপুর ২টা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আর্চওয়ে দিয়ে মেলায় ঢুকে পাঠক, প্রকাশক, দর্শনার্থী- কাউকেই খুব একটা চোখে পড়লো না।


 
হাতে গোনা কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে দেখা গেলো মেলায় ঢুকে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। বেশিরভাগ স্টলের ঝাঁপ বন্ধ। আগে-ভাগে যারা ঝাঁপ তুলেছেন তারা চুপচাপ বসে আছেন। অনেকটা মুখে হাত দিয়ে বসে থাকার মতো।
 
প্রকাশকদের পক্ষ থেকে দাবি ছিলো মেলা ৭ দিন বাড়ানোর। কিন্তু বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ প্রকাশকদের এ দাবিতে কর্ণপাত না করে অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ ৩ দিনের জন্য সর্বসাকুল্যে আড়াই ঘণ্টা আয়ু বাড়ায়।
 
এই বর্ধিত আড়াই ঘণ্টার প্রথম ঘণ্টাটি শুরু হয় মেলার ২৬তম দিন বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায়। কিন্তু ফাল্গুনের আগুনঝরা দুপুরে খোলা আকাশের নিচে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঠক, লেখক, প্রকাশক, দর্শনার্থী, আয়োজক, ক্রেতা, বিক্রেতা কাউকেই খুব একটা দেখা যায়নি।
 
মেলার দরজা খোলার একঘণ্টা পর শাহীন প্রাকশনীর স্টলে গিয়ে দেখা যায়, দুই বিক্রয়কর্মী চুপ-চাপ বসে আছেন। জিজ্ঞেস করতেই তারা বলেন, অকারণ মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে। লোকজন তো সেই ৪টার পরই আসবে। কেউ কি এই রোদের মধ্যে দুপুর বেলায় মেলায় ঢোকে?

বই বিক্রির শেষ অবস্থা জানতে চাইলে বলেন, মেলা তো প্রায় শেষ। এখন আর বিক্রি কী। তারপরও এখন যারা মেলায় আসছেন তারা বই কিনছেন।
 
বিকেল সাড়ে ৩টা। সোরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার পূর্বপাশ থেকে পশ্চিম পাশে যাওয়ার সময় দেখা হয় গুলশান নিকেতন থেকে আসা আহসান হাবিব ও ফারিয়া নাঈম দম্পতির সঙ্গে। দু’জনের হাতেই বই। আরো বই কেনার জন্য এ স্টল থেকে ও স্টলে ঘুরছেন তারা।
 
কি ধরনের বই কিনছেন- জিজ্ঞেস করতেই আহসান হাবিব বলেন, সেবা প্রকাশনী থেকে কিছু রহস্য উপন্যাস কিনেছি। হুমায়ূন আহমেদ, সুমন্ত আসালম ও আনিসুল হকের বইও কিনেছি কয়েকটি। আমি নিজে তো বই পড়ি না। বই পড়ে আমার স্ত্রী। মূলত ওর পছন্দের বইগুলোই কেনা হচ্ছে।
 
ব্যবসায়ী আহসান হাবিব নিজে না পড়লেও স্ত্রীর জন্য বই কিনছেন- বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে সামনের দিকে এগোয়।
 
মেলার দরজা খোলার দুই ঘণ্টা পর বদলে যায় শুরুর চিত্র। বিকেল ৪টায় মেলার দু’পাশেই প্রচুর সংখ্যক লোক জমে যায়। আরো আশার খবর, মেলায় আসা বেশিরভাগ লোকের হাতেই বই। বইহীন লোকের সংখ্যা কম।
 
বই কিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়ছিলেন বদরুন্নেছা মহিলা কলেজের তিন শিক্ষার্থী শাম্মী, পারুল ও রোকসানা। কথা হয় তাদের সঙ্গে।
 
বাংলা বিভাগের শাম্মী বলেন, ভরা পুকুরের পানি শুকিয়ে গেলে যেমন শুধুই মাছ থাকে, মেলার ভিড় কমে এখন যা আছে তা শুধুই পাঠক। এখন যারা আসছেন, বই কেনার জন্যই আসছেন।
 
মেলার সময় বাড়ানো সম্পর্কে পারুল বলেন, একুশের পরে গল্প-আড্ডার জন্য আসা লোকের সংখ্যা কম থাকে। যারা আসেন বই কেনার জন্যই আসেন। সেক্ষেত্রে বিকেল বেলাটাই বেছে নেন সবাই। তাই মেলা এক ঘণ্টা আগে শুরু করার কোনো প্রয়োজন ছিলো না।
 
মঞ্চের আয়োজন
প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও মেলার মূলমঞ্চে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। আজকের বিষয় ছিলো ‘গত বছরে বাংলাদেশের কবিতা’। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিকউল্লাহ খান। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন মুহম্মদ নুরুল হুদা, অনীক মাহমুদ ও রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন। সভাপতিত্ব করেন আসাদ চৌধুরী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫

** মেলায় প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের যত বই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।