ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

নাসির আলী মামুনের হুমায়ূন স্মৃতিফ্রেম ‘অনন্ত জীবন যদি’

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
নাসির আলী মামুনের হুমায়ূন স্মৃতিফ্রেম ‘অনন্ত জীবন যদি’ ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: না ফেরার দেশে চলে যাওয়া জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করিয়ে দেবে ‘অনন্ত জীবন যদি’ বইটি। হুমায়ূনের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি নিয়ে অন্যপ্রকাশ বের করেছে এই ফটো অ্যালবাম।

যার আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ফটো অ্যালবামটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা হুমানয়ূনকে নিয়ে তাদের স্মৃতিকথা ও বিভিন্ন মুহূর্ত স্মরণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, খুব ভালো লাগছে যে এমন একটি স্মৃতিমূলক বই প্রিয় হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে হলো। এই ফটো অ্যালবামের কারিগর ছবির মানুষ নাসির আলী মামুনকে অনেক ধন্যবাদ, তিনি সুন্দর সুন্দর সব ছবি তুলেছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই ফটো অ্যালবাম মানুষকে হুমায়ূন সম্পর্কে আরও জানাবে। স্মৃতির কথা মনে করাবে। ভক্তদের আরও হুমায়ূন সম্পর্কে ভাবাবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, হুমায়ূনের ছবিগুলোর মধ্য দিয়ে পাঠক-দর্শক তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। ছবিগুলো অসাধারণ মানবিক বক্তব্য তুলে ধরবে।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তার (হুমায়ূনের) মধ্যে সব কিছুই ছিল। তিনি খুব সহজভাবে দেখতেন এই সমাজকে। আর ঠিক তেমনি সহজভাবে তুলে আনতেন তার লেখায়। প্রিয় হুমায়ূনের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। যা কখনও ভোলার নয়।

বড় ভাইয়ের স্মৃতির কথা স্মরণ করে লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, হুমায়ূন সবার কাছেই মূল্যবান হয়ে থাকবেন চিরকাল। এদেশের মানুষ তাকে ভুলতে পারবে না। তার স্মৃতিকেই পুনরায় মনে করিয়ে দেবে ফটো অ্যালবাম বইটি।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বক্তব্য দেন হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তিনি কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন। শাওন বলেন, কোনো অনুভূতি আজ দেখাতে পারছি না। মামুন ভাই অনেক সৌভাগ্যবান যে তিনি ছবিগুলো তোলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কারণ হুমায়ূন আহমেদ তার ছবি তুলতে দিতেন না। তবে কেন জানি শেষ দিকে এসে-মামুন ভাইকে ডেকে নিয়ে ছিলেন ছবি তোলার জন্য।

এই বলতে বলতে শাওন ফের কেঁদে ফেলেন।

এর আগে, বক্তব্য দেন অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই অ্যালবামটি তার বেঁচে থাকার সময়ই করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। আজ আমরা এখানে উপস্থিত, এতো বড় একটি আয়োজন করেছি, অন্যপ্রকাশও এতো জনপ্রিয় হয়েছে তার একমাত্র কারণ হুমায়ূন আহমেদ।

তিনি বলেন, সেই ১৯৯২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। এটি একটি বড় পাওয়া। আশা করি এমন ফটো অ্যালবাম আগামীতে আরও করতে পারবো।

ছবিগুলো যিনি তুলেছেন সেই নাসির আলী মামুন বলেন, আমি ৪৫ বছর ধরে ক্যামেরায় বিভিন্ন মানুষের ছবি বন্দি করছি। বিশিষ্টজনদের মধ্যে যার সংখ্যা ৭শ’ হবে। তবে বিশেষভাবে হুমায়ূনকে চেনার চেষ্টা করেছি কাজের মধ্য দিয়ে। ক্যামেরার লেন্সের মধ্য দিয়ে তাকে বোঝার চেষ্টা করে গেছি। তিনি ছবি তুলতে চাইতেন না, তবে জীবনের শেষের দিকে তিনি অনেক সময় দিয়েছিলেন।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, ট্রাস্ট ব্যাংকের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিস এ খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল প্রমুখ।

বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৮শ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
আইএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।