ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

বঙ্গবন্ধুর দিল্লি অভিযান…

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
বঙ্গবন্ধুর দিল্লি অভিযান… বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মীজীবনী নিয়ে গ্রাফিক নভেল দেখছে এক শিশু। ছবি: সুমন শেখ।

ঢাকা: রাজনৈতিক জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেশিরভাগ সময় কেটেছে কারাগারে। অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে খুব নৈপূণ্যের সঙ্গে দিয়েছেন স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপ। 

এক পর্যায়ে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে সাত কোটি বাঙালিকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেন প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক।  তার ডাকে কেঁপে ওঠেছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মসনদ।

 

২৫ মার্চ কাল রাতে ভীত ইয়াহিয়ার নেতৃত্বাধীন শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের দাবায়ে রাখতে নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। নিরীহ মানুষের ওপর শুরু হয় অপারেশন সার্চ লাইট।  

তার সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে। প্রতিরোধ গড়ে তুলে আপামর জনতা। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

সামনে থেকে বঙ্গবন্ধু বুক পেতে দিয়ে ছিনিয়ে এনেছেন এ স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কারাগারেও বন্দি শেখ মুজিবের ওপর চলে নির্যাতন। নিজের স্বপ্নকে গণমানুষের স্বপ্নে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। যা কোনো মতেই সহজ কিছু ছিল না।

জাতির জনক দেশের মানুষকে মুক্তি এনে দিতে বারবার শাসকগোষ্ঠী দ্বারা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নিক্ষেপিত হয়েছিলেন। সেখানেই বসে সাজাতেন নানা পরিকল্পনা।  

ভাবতেন দেশ ও জনগণকে নিয়ে। যার অনেক কিছুই তিনি লিপিবদ্ধ করতেন প্রাত্যহিক ডায়েরিতে। বর্ণনা করতেন নানা ঘটনার। যার ওপর ভিত্তি করেই রচিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’।

বইটি ইতোমধ্যে দেশের রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, সাংবাদিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে সমাদৃত হয়েছে।

বইটি প্রকাশের পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ধারণা ছড়িয়ে দিতে শিশুদের উপযোগী করেও অসমাপ্ত আত্মজীবনী রচিত হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্রাফিক নভেল’।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) গত ৪ বছর ধরে এটি প্রকাশ করছে। যার প্রকাশক  রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও নসরুল হামিদ।  

শিবু কুমার শীলের সম্পাদনায় শিশুদের উপযোগী করে রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবী’তে কার্টুন আকারে ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে। গত তিনটি বইমেলায় প্রকাশিত তিনটি পর্ব এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।  

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হয় ‘বঙ্গবন্ধুর দিল্লি অভিযান’ গ্রাফিক নভেল পর্ব-৪। এভাবে পরবর্তী মেলাগুলোতে আরো আটটি পর্ব প্রকাশ করা হবে।

সিআরআই প্রকাশিত বইটি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছে চর্চা নামের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। চর্চার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আল হাসনাত বাংলানিউজকে বলেন, গ্রাফিক নভেল দেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে দিতে আমরা করছি। দেশের বাইরে ভারতেও এর কার্যক্রম চলছে। আমেরিকায় চেষ্টা চলছে।  

তবে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে নভেলটি পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।  

অমর একুশে গ্রন্থমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অংশ নেওয়া সিআরআই’র স্টলে কথা হয় শিশু তামিম হাসানের সঙ্গে। একমনে পাতা উল্টাচ্ছে, আর বানান করে ভাঙা ভাঙা উচ্চারণ করে দু-একটা লাইন পড়ছে।  

গ্রাফিকে আঁকা ছবিটি কার? জবাবে তার সপ্রতিভ উত্তর, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। ’ তিনি কে এমন প্রশ্ন করায় উত্তর এলো, ‘জাতির পিতা, বাংলাদেশের বড় নেতা। ’

তার সঙ্গে কথোপকথনের সময় পাশে দাঁড়িয়ে বাবা তাহের হাসান মিটমিট করে হাসছিলেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, কোনো দলের সাপোর্ট করি না। তবে বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন সবার জানা উচিত। এই ভাবনা থেকেই ছেলেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই পড়াতে চেষ্টা করি, নিজেও পড়ি।  

গ্রাফিক নভেলটির তিনটি পর্ব তামিমের পড়া শেষ। এবার চতুর্থটা নিতে এসেছেন বলে জানান তামিম হাসানের বাবা তাহের হাসান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
ইইউডি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।