ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

শিশুপ্রহরে শিশুদের বইপড়া শেখানোর প্রত্যয়

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯
শিশুপ্রহরে শিশুদের বইপড়া শেখানোর প্রত্যয় বইমেলায় শিশুপ্রহরে বই দেখছে শিশুরা/ছবি- ডি এইচ বাদল

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: আমাদের শিশুরা এখন আর বই পড়ে না। ভার্চুয়াল জগত আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুঁদ থেকে বিনোদন নিয়ে সময় পার করছে। বইপড়ার তুলনায় সেগুলোতেই আগ্রহ তাদের।

এ বিষয়ে বিজ্ঞজনদের মতে, বই পড়লে বাড়ে কল্পনা শক্তি, বিকাশ ঘটে মস্তিস্কের। আর জ্ঞান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রশস্ত হয় চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।

শনিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৯ম দিন ছিলো শিশুপ্রহর। এদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য বইমেলায় রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সকাল থেকেই বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুরা আসে বইয়ের ঘ্রাণ নিতে।

এদিন বেশকিছু অভিভাবকের সঙ্গে কথা হলে তারাও জানিয়েছেন শিশুদের বইপড়ার গুরুত্বের দিকগুলো। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা ইসমত আরা শিমু বলেন, আমি সবসময়ই চেষ্টা করি আমার বাচ্চাদের বইপড়ানোর জন্য। এতে করে তাদের যেমন জ্ঞান বৃদ্ধি ঘটে, তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশও বৃদ্ধি পায়। আর এখন থেকেই বইপড়ার অভ্যাসটা গড়ে তুললে এর একটি সুন্দর প্রভাবও পড়বে ওর উপর।

বইমেলায় শিশুপ্রহরে বই দেখছে শিশুরা/ছবি- ডি এইচ বাদলশুধু অভিভাবক নয়, প্রকাশক এবং গুণী লেখকদের মতামতও মোবাইল বা কম্পিউটারের বাইরে এসে শিশুদের বইপড়ানোর দিকে মনোযোগী করে তোলা। এ প্রসঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় শিশুদের জনপ্রিয় বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাবা-মাকে বলবো, আপনারা একটু বাচ্চাদের হাতে টাকা দেন, ওরা বই কিনুক। উৎসাহ দেন বইপড়ার জন্য। বাচ্চাদের ইউটিউব থেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন, ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন, স্ক্রিন থেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন। স্ক্রিন হচ্ছে একমুখী, সে আমাকে দেয়, আমি কিছু দিতে পারি না। কিন্তু বই-তো একমুখী না। আমি যখন বই পড়ি তখন কল্পনা করি, চিন্তা জাগে, আর এটা একটা প্রক্রিয়া। কিন্তু ফেসবুক দেখলে বা ইউটিউব দেখলেতো কোনো প্রক্রিয়া হয় না, শুধু ভালোলাগা জন্মে। আর এই সমস্যাটা শুধু আমাদের নয়, পৃথিবীব্যাপী। সারা পৃথিবী এখন চেষ্টা করছে বাচ্চাদের বইপড়া শেখানোর জন্য।

বইমেলায় শিশুপ্রহরে বই দেখছে শিশুরা/ছবি- ডি এইচ বাদলমেলার সার্বিক মান বিবেচনায় তিনি বলেন, একেবারে শিশু না, কিশোর, যারা ক্লাস সেভেন এইটে পড়ে, এই বয়সটায় তার সবকিছু মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটে এবং শিক্ষণীয় সময়টা পার করে। আমাদের ওই সময়টাকে আরো একটু টার্গেট করা যেতে পারে। তবে মেলা যেভাবে আছে, খারাপ নেই। আর প্রত্যেকটা স্কুল যদি দায়িত্ব নেয় যে আমাদের স্কুলের সব শিশুদের আমরা মেলায় নিয়ে যাবো, সে ব্যাপারটাও বেশ ভালো হয়। আগে থেকে মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব বাচ্চাদের নিয়ে আসা হলো মেলায়। ওরা ঘুরলো, বেড়ালো, শিখলো।

এর আগে সকালের নরম আবহাওয়াতেই শুরু হয় বইমেলা। শিশুরা বাবা-মায়ের হাত ধরে নিতে আসে বইয়ের ঘ্রাণ। শিশুচত্বরে বাচ্চারা ছুঁয়ে দেখে বই, মেতে উঠে সিসিমপুরের হালুম-টুকটুকি-ইকরি আর শিশুর সঙ্গে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৯
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।