ইন্টারভিউয়ের আগে আমাদের কী কী করণীয় তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি। এমন কী ইন্টারভিউয়ের সময় কী করতে হবে তা নিয়েও বিস্তর ঘাটাঘাটি করি।
১। ইন্টারভিউ শেষে আপনাকে যখন প্রশ্ন করা হয়, আপনার কি আমাদের কাছে কিছু জানার আছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা উত্তর দেই, না। এটা আমাদের একটা কমন ভুল। "না" উত্তরটি দেয়ার সাথে সাথে আপনি কিন্তু পরবর্তী যোগাযোগের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আপনি নিয়োগদাতার কাছে কোম্পানির বেতন, পলিসি, সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন।
২। এরপর হাসিমুখে বলতে পারেন, "স্যার কবে থেকে জয়েন করতে হবে?" আপনার ভিন্ন রকম এই অ্যাপ্রোচে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত নিয়োগকর্তাদের মধ্যে অন্যরকম মনোভাব তৈরি হবে। তবে, এরকম স্মার্ট অ্যাপ্রোচে যাওয়ার আগে ইন্টাভিউয়ারের মানসিকতা বুঝতে চেষ্টা করুন। এছাড়া কবে নাগাদ ফলাফল জানা যাবে সেটাও জেনে নিতে পারেন।
৩। "স্যার, আমি যে কোন কাজ করতে পারবো, আমার ব্যাপারটা একটু দেখবেন। " অথবা, "স্যার, আমি ফ্যামিলি নিয়ে খুব সমস্যায় আছি, চাকরিটা আমার খুব দরকার"- এরকম কথা বলে শেষ করবেন না। নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করবেন না। অন্তত এভাবে বলুন, "আশা করি খুব শীঘ্রই আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে। " অথবা, "আশা করি, আপনাদের সাথে অচিরেই মিলেমিশে কাজ করতে পারবো। "
৪। ইন্টারভিউ শেষে যিনি ইন্টারভিউ নিলেন, তার একটা কার্ড চেয়ে নিন।
৫। কোন কারণে যদি বুঝতে পারেন চাকরিটা আপনার হচ্ছে না, তাহলে সুযোগ বুঝে ইন্টারভিউয়ারের ফিডব্যাক নিন। আপনার ভুলগুলো জেনে নেয়ার চেষ্টা করুন।
৬। বাসায় পৌছে ইন্টারভিউয়ারকে "থ্যাংক ইউ" মেইল দিন। এ ধরনের মেইলে কি লিখবেন? লিখতে পারেন,
আমি আপনাদের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত (ইন্টারভিউ ডেট ও কোন পদের জন্যে ইন্টারভিউ দিয়েছেন সেটা উল্লেখ করুন)। ইন্টারভিউ থেকে আপনি কি কি শিখেছেন এরকম দু'টি পয়েন্ট উল্লেখ করুন। এরপর নিজের সবল দিকগুলো দিয়ে কিভাবে আপনি কোম্পানির উন্নতি করতে পারবেন কয়েক বাক্যে লিখুন। শেষে গিয়ে পুনরায় কল পাওয়া বা সিলেক্টেড হওয়ার আশাবাদ জানিয়ে মেইল শেষ করুন। মোট চার প্যারায় সাত থেকে আট বাক্য লিখবেন।
৭। ইন্টারভিউ খারাপ হলেও সামাজিক গনমাধ্যমে এ নিয়ে কোন বাজে মন্তব্য করবেন না। এতে আপনার সাথে পরিচিতরা আপনাকে আর রেফার করবেন না। ধরুন, আপনি এসিআইতে ভাইভা দিয়েছেন। ভালো হয়নি, যাচ্ছে তাই লিখে পোস্ট দিলেন। আপনার ফেসবুকেই রয়েছে স্কয়ারের কেউ একজন। সে কি আপনাকে আর কখনো রেফার করবেন?
৮। ইন্টারভিউ দেওয়ার পর আমরা আর ফলোআপ করি না, এটা আমাদের মস্ত বড় ভুল। ফলোআপই যদি না করবেন, তাহলে গিয়েছিলেন কেন?
৯। বার বার ফোন দিয়ে নিয়োগকর্তাকে বিরক্ত করবেন না। সপ্তাহখানেক পরে, থ্যাংক ইউ মেইলের নিচে, একটি ফলো আপ মেইল ড্রপ করতে পারেন। একটি মেসেজ দিতে পারেন।
১০। যারা ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছেন, তাদের সাথে পরিচিত হোন। তাদের সম্পর্কে জানুন। নিজের সম্পর্কে তাদের জানান। তাদের মাধ্যমে আপডেট জানতে পারবেন, নতুন সুযোগও তৈরি হতে পারে।
রুমে ঢোকার সময় এবং বের হবার সময়ের ইম্প্রেসান বা ভাবভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসিমুখে বের হোন। আপনার হাসিমুখ ও স্কিলের এমন একটা ইমেজ ইন্টারভিউ রুমে দিয়ে আসুন, যেন চাকরিতে আপনাকে নিতে বাধ্য হয়।
লেখক : নিয়াজ আহমেদ
সিইও, কর্পোরেট আস্ক
ট্রেইনার ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার
ইমেইলঃ niazabeed@gmail.com