নীলফামারী: নীলফামারী জেলায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় হাত-পা কুঁকড়ে আসছে। তীব্র শীত ও কুয়াশায় জেলার ডিমলায় ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় স্থবির তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষের জীবন।
ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশা ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে হাজারো পরিবার বেড়িবাঁধ ও জেগে ওঠা চরে অস্থায়ীভাবে ঘর তৈরি করে বসবাস করে। কেউবা অন্যের জমিতে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। চরাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিকাজ ও মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তীব্র শীতের কারণে তাদের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটেছে। এছাড়া দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তারা চিকিৎসাসহ অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বাইশপুকুর এলাকায় তিস্তা নদীতে মাছ না ধরেই বাড়ি ফিরছিলেন ধীরেন, রফিকুল, রজব আলীসহ কয়েকজন জেলের একটি দল।
তাদের সঙ্গে কথা হলে দলে থাকা রজব আলী বলেন, সকাল ৮টায় নদীতে আসছি। কষ্ট করি এক ঘণ্টা মাছ ধরি। কিন্তু ঠাণ্ডাত হাত-পাও কোঁকড়া নাগি যায়ছে আর কুয়াশাতে কিছু দেখাও যায় না। ওই জন্যে আইজ আর মাছ ধরা হইলনা। বাড়ি যাইছি। এমতোন ঠাণ্ডা থাকলে হামার জালোত মাছও পড়বে না, কষ্টে দিন কাটার নাইগবে।
খালিশা চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, চরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। এখানকার বাসিন্দারা শীত থেকে রক্ষা পেতে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা নেওয়ার চেষ্টা করছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন।
ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত উপজেলার জন্য ৫ হাজার ৮শটি কম্বল বরাদ্দ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪ হাজার ১শ’টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট কম্বল বিতরণের কার্যক্রম চলছে।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে এই জনপদে সূর্যের দেখা মিলেনি। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় সকালের ও রাতের বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
এএটি