মেহেরপুর: মেহেরপুরে গত ১৪ দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহ। বাতাসে বইছে আগুনের হল্কা।
গত দুই সপ্তাহের তীব্র তাপদাহের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় মেহেরপুর জেলার অধিকাংশ গ্রামে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এদিকে, পানি দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না মাঠের সবজি আবাদ। শুকিয়ে যাচ্ছে সড়কের ধারের বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছসহ গাছের পাতা। রাস্তায় তেমন কোনো মানুষজন নেই। যানবাহনেরও চলাচল কমে গেছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ১১ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে এই তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৬ শতাংশ। এছাড়া সকাল ৯টার দিকে রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৫ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ।
২৬ এপ্রিল থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার তাপমাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস থেকে। এ সময়ে সবাইকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জেলায় সকালে দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেলা যত বাড়তে থাকে সূর্যের চোখ রাঙানিও ততো বাড়তে থাকে।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এ জেলায়। একটানা ১৪ দিন তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহে হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীর ভিড় বাড়ছে, চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা হাসপাতালের বারান্দা ও করিডোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তীব্র রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠাণ্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। রোদের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরমে নাকাল মানুষজন একটু স্বস্তি পেতে পথের ধারের বেল, বা লেবুর শরবতের পাশাপাশি ডাবের দোকান ও কোমল পানির দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। অস্বাস্থ্যকর জেনেও মানুষ রাস্তার পাশের লেবু বা বেলের শরবত ও আখের রসের দিকে ঝুঁকছেন একটু তৃষ্ণা মেটাতে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, সকালের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে রৌদ্রের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
এসআরএস