শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): পুকুর, বিল বা জলাশয়ে ফোটা শাপলা ফুল দেখে আমরা বরাবরই অভ্যস্ত। ফুটে থাকা সেসব শাপলা বা পদ্মফুল আমাদের হৃদয় জুড়ায়।
তবে এবার পুকুর-জলাশয়ে নয়, বাড়ির টবে ফোটানো হয়েছে শাপলা। গৃহকর্তার যত্নে-আত্তিতে প্রস্ফুটিত এসব ফুল শোভাবর্ধনের পাশাপাশি ‘টবেও শাপলা চাষ সম্ভব’ ব্যাপারটিকে একটি উদাহারণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।
ব্যতিক্রমী চিন্তাধারা থেকে নিজের বাঙলোর টবে এ ফুলগুলো ফুটিয়েছেন ডানকান ব্রাদার্সের মাইজদিহি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম।
কৃষি গবেষক ও প্রকৃতিপ্রেমি সাইফুল বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বাঙলোর মাটির টবে ১২/১৪টি শাপলা (Waterlily) ফুল ফুটেছে। সেগুলো বেশ সতেজ হয়েও রয়েছে। আমার একটু সন্দেহ ছিল যে, এই টবে ফুলটি ফুটবে কি-না? প্রায় দু’মাসের পরিচর্যা সার্থক হলো এর মধ্য দিয়ে’।
মাটির টবে এভাবে গাছ সৃজন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দু’মাস আগে শেকড়সহ কয়েকটি শাপলা গাছ আমি পুকুর থেকে তুলে নিয়ে এসেছি। পরে একটি মাটির টবে ৩০/৩৫ লিটার পানি রেখে সেগুলোকে প্রতিস্থাপন করেছি। মাটির টবটিতে চার কেজি মাটি ও দু’ কেজি শুকনো গোবরও দিয়েছি। প্রায় বিশ দিন পর পর পানি পরিবর্তন করেছি’।
প্রাকৃতিক গোবর সার ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক সার এখানে ব্যবহার করা হয়নি বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলামের মতে, নিজ হাতে ফুল ফোটানোর সঙ্গে নিজের ভালোলাগার ব্যাপারটি দারুণভাবে জড়িত। অবসরের কোনো কোনো মুহূর্তে সেই প্রস্ফুটিত ফুলগুলোর দিকে তাকালে পরমানন্দে নেচে ওঠে মন। তখনই দীর্ঘদিন ধরে গাছটিকে পরিচর্যার পরম সার্থকতা অনুভব করা যায়।
আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা। আমাদের গৌরবময় ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ রাষ্ট্রীয় অর্জনগুলোর অন্যতম প্রতীক এই প্রাকৃতিক শাপলা। বাড়ির ছাদে বা নিজ উদ্যোগে এ ফুলটি আমরা চাষ করতে পারি। নিজের হাতে ফোটানো সেই ফুল জাতীয় দিবসগুলোতে স্মৃতিসৌধ বা শহীদ মিনারে অর্পণ করে আমরা প্রাণোৎসর্গকারী লাখ লাখ শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে পারি। তাতে নিজের আত্মতুষ্টিও বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
বিবিবি/এএসআর