ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বাইক্কা বিলের রৌদ্রজ্জ্বল সৌন্দর্যে দুর্লভ পরিযায়ীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮
বাইক্কা বিলের রৌদ্রজ্জ্বল সৌন্দর্যে দুর্লভ পরিযায়ীরা বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য-ছবি- বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: পাখি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের দিকে হিজল-তমালের বন চিরসবুজ হয়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে বসন্তবাতাস তো রয়েছেই। 

দুর্লভ পরিযায়ী দেখার ইচ্ছে নিয়েই মূলত বাইক্কা বিলে আসা। হঠাৎ বৃষ্টি পেয়ে গজিয়ে উঠা হিজল-তমালের নতুন কুঁড়িগুলো আলাদা সৌন্দর্য ছড়িয়ে রয়েছে।

সময় গড়ালো। বাড়তে থাকলো রোদের তাপ।  

প্রায় এক কিলোমিটার দূরের টাওয়ারটাকেই বিশেষ দুটো কারণে নির্বাচিত করা হলো। ওখানে পর্যটকের আনাগোনা নেই। নেই কোলাহল-হট্টগোল। চুপিসারে পাখি পর্যবেক্ষক ও গবেষকরা তাদের নানা কাজ এখানেই শেষ করেন।
 
সোমবার (১২ মার্চ) দুপুরে তখন দূরবীক্ষণযন্ত্রে বার বার স্পর্শ করছে চোখ। নানা পাখিময় দৃশ্য বর্ণনাতীত ভালো লাগা ছড়াচ্ছে। আবারও সেই ‘খয়রামাথা কাস্তেচরা’দের (Black-headed Ibis) দেখা গেল। তারা বিরতিহীনভাবে কাদায় মুখ গুজে খাবারের অনুসন্ধানে ব্যস্ত! 
 
নিঃসঙ্গ ‘উত্তুরে-খুন্তেহাঁস’ (Northern Shoveler) কে দেখা গেল ‘পাতি-সরালি’দের (Lesser Whistling Duck) ভিড়ে। সে আপন মনে একা বসে আছে। কখনওবা কচি জলজ তৃণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খাচ্ছে। এ পরিযায়ীটির দৈর্ঘ্য অন্য হাঁসের থেকে অনেক বড় বলে (প্রায় ৫২ সেন্টিমিটার) সে খুব সহজেই চোখে পড়ে। ভালো করে চারদিক খুঁজেও ওর সঙ্গীকে পাওয়া গেল না।  
 
ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলতেই হবে! কারণ, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর-হাঁস ‘ম্যান্ডারিন হাঁস’ (Mandarin Duck) কে পাওয়া গেল বাইক্কা বিলের নানা পরিযায়ী হাঁসের ভিড়ে। তবে সেও ছিল একদম একা। এটি পৃথিবীব্যাপী বিরল প্রজাতির হাঁস। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে দেখা গিয়েছিল।
 
গোধূলির পূর্বক্ষণে ফিরে আসার সময় পাওয়া গেল এক ঝাঁক ‘খয়রা-কান্তেচরা’দের (Glossy Lbis)। গাঢ় তামাটে আর ধাতব সবুজ-বেগুনির সৌন্দর্য নিয়ে উপস্থিত। দিনশেষে ওরা এই বাইক্কাবিলে নিজেদের মতো করে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে।
 
বেলা যত গড়ালো পাখি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের কাছে তত ভিড়তে থাকলো বেগুনি কালেম, ছোট পানকৌড়ি, জলমুরগিসহ অন্য জলচর পাখিরা। অবাক বিস্ময় নিয়ে কেবল তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা।  
 
এই পাখি পর্যবেক্ষণে সঙ্গে আছেন পাখির টানে নারায়নগঞ্জ থেকে বাইক্কা বিলে আগত সাঈদ বিন জামাল। তিনি পেশায় চিকিৎসক। নেশায় বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী।  
 
রৌদ্রদীপ্ত পরিবেশে এমন পরিযায়ী পাখিদের নিজ চোখে দেখার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরও সুগভীর। ‘ম্যান্ডারিন হাঁস’ এবং ‘খয়রা-কান্তেচরা’ এ দুটো প্রজাতিকে নিয়ে দুটি বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করার ইচ্ছে নিয়ে সেদিনের মতো নীরবে ঘরে ফেরা।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮
বিবিবি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।