ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন ঘন কুয়াশার ঢাকা পড়েছে চারিদিক। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: টানা পাঁচদিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহে সিরাজগঞ্জের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশায় ঢাকা রয়েছে পুরো সিরাজগঞ্জ।শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষগুলোর দুর্ভোগও বেড়েছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি শীতবস্ত্রের সংকটে কষ্টে দিনাতিপাত করছে ছিন্নমূল ও হতদরিদ্ররা।

এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন দেখা গেছে পুরো শহর।

৫০ মিটার দূরত্বের জিনিসও দেখা যাচ্ছিরো না। দুপুরে এক ঝলক রোদের আলো চোখে পড়লেও কুয়াশা একেবারে ছাড়েনি। দুপুর গড়িয়ে পড়লে আবারও ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর। গত পাঁচদিন ধরেই এমন অবস্থা চলছে।

শহরের রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম, জুয়েল রানা ও কামরুল ইসলাম বাংলানউজকে বলেন, শীতের কারণে গত তিনদিন ধরে কাজে বেরোতে পারিনি। টানাটানির সংসার তাই আজ দুপুরে বাধ্য হয়ে কাজে বের হয়েছি। কিন্তু শহরে লোকজন খুব কম বেরিয়েছি। এ কারণে সহসাই যাত্রীর দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশার ঢাকা পড়েছে চারিদিক।  ছবি: বাংলানিউজসবজিবিক্রেতা ইসহাক আলী, মুজিবর রহমান ও ছাখায়াত হোসেন বলেন, কাকডাকা ভোরে সবজি নিয়ে বাজারে এলেও গ্রাহকের পরিমাণ খুবই কম। শীতের দাপটে মানুষ ঘর থেকেই বের হচ্ছে না। এ কারণে কেনাবেচাও অনেক কম হচ্ছে।

যমুনার চরাঞ্চল অধ্যুষিত কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ভূঁইয়া প্রচণ্ড শীতে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। হতদরিদ্র নদী ভাঙনকবলিত মানুষগুলোর শীতবস্ত্রের অভাব রয়েছে।

চৌহালীর বাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার আকন্দ বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া ৪শ কম্বল বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার চেয়ে একেবারেই নগন্য।  

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র বলেন, শীতের প্রকোপে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ রোগে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শীতের কারণে ফুসফুসের সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া রোগীরে প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এসব রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১শ ১৬ জন নিউমোনিয়া ও ফুসফুসে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও ডায়রিয়া ও আমাশয়জনিত রোগীর সংখ্যায় বেড়েছে বলে যোগ করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, শীতে বিপর্যস্ত হতদরিদ্র মানুষগুলোর জন্য কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৫০ হাজার কম্বলের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে ও ব্যক্তি উদ্যোগেও কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলছে।

রাজশাহী আবহাওয়া দফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মোদক বাংলানিউজকে জানান, সিরাজগঞ্জ জেলায় দুপুর পর্যন্ত তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।