বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা মিরপুর সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২০ মার্চ থেকে চিড়িয়াখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক মাস ৫ দিনে এতে ১ কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।
তবে এক মাসের ওপর বন্ধ থাকায় সরকার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব হারালো। সামনে যত দিন যাবে ততই লোকসান বাড়বে।
সরকারের রাজস্ব হারালেও প্রাণীরা যে পরিবেশ উপভোগ করছে তার মূল্যও নেহায়েত কম নয়।
চিড়িয়াখানায় গড়ে মাসে ১০ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করে। তবে ঈদসহ অন্য উৎসবে সেটা হয়ে যায় দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার। টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর মো. নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনে প্রাণীরা অনেক ভালো আছে। চিড়িয়াখানায় মানুষের প্রবেশ বন্ধ থাকায় পশুপাখির চঞ্চলতা বেড়েছে। সবাই পেট ভরে খাবার খাচ্ছে আর নিজেদের ইচ্ছামতো সময় পার করছে। কেউ তাদের বিরক্ত করছে না। মনে হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা বনের মধ্যেই রয়েছে। আমার চাকরি জীবনে চিড়িয়াখানায় এমন পরিবেশ দেখিনি।
তিনি আরো বলেন, সবাই পশুপাখির যত্ন নিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পাওয়ায় প্রাণীদের বাচ্চাগুলোও ভালো আছে। নতুন করে প্রজনন হারও বেড়েছে চিড়িয়াখানায় বন্যপরিবেশ থাকায়। তবে সরকার মাসে এক কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, পশুপাখির সেবায় চিড়িয়াখানায় ১২ জন কর্মকর্তা, ১৫০ জন কর্মচারী ও পাঁচজন ডাক্তার ২৪ ঘণ্টায় চার ধাপে দায়িত্ব পালন করছেন।
বন্যপরিবেশের ফলে জিরাফ, জেব্রা, হরিণ, বানর, ইমু পাখি, বাঘ, হাতিসহ অনেক প্রাণীর প্রজনন হার বেড়েছে। জানা যায়, ১৯৭৪ সালে ১৮৬ একর জায়গা ওপর গড়ে ওঠা দেশের সবচেয়ে বড় এই মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। এখানে ১৯১ প্রজাতির মোট ২ হাজার ১৫০ প্রাণী রয়েছে। নতুন করে চিতাবাঘ যোগ হয়েছে। এখানে মাংসাশী আট প্রজাতির ৩৮টি প্রাণী, ১৯ প্রজাতির বৃহৎ প্রাণী (তৃণভোজী) ২৭১টি, ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ১৯৮টি প্রাণী রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতির সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির ১ হাজার ১৬২টি পাখি, অ্যাকুরিয়ামে রক্ষিত ১৩৬ প্রজাতির ২ হাজার ৬২৭টি মৎস্য। সব মিলিয়ে রয়েছে ১৩৭টি পশুপাখির খাঁচা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২০
এমআইএস/এএ