আবহাওয়াবিদ মুহম্মদ আরিফ হোসেন স্বাক্ষরিত আম্পানের ২৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে এখন একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন>>>>>১৪ জেলার ওপর তাণ্ডব চালাতে পারে সুপার সাইক্লোন আম্পান
সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কি.মির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কি.মি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কি.মি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় ঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর,নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়াও সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কি.মি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
‘আম্পানে’ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এটি পশ্চিমবঙ্গে দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার দ্বীপের মাঝামাঝি কোনো স্থান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ।
ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাশ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যেই সুপার সাইক্লোনের (সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৫৫ থেকে ২৬৫ কি.মি) তীব্রতা কমবে। তবে শেষরাতের দিকে উপকূলে আছড়ে পড়লে এটির তীব্রতা কিছুটা কমে অতি প্রবল (সর্বোচ্চ ২১০ থেকে ২৩০ কিমি) ঘূর্ণিঝড় হিসেবে তাণ্ডব চালাবে। এরপর আরো শক্তি ক্ষয় করে উপকূল অতিক্রম করে সমতলে ওঠে আসার সময় বুধবার সন্ধ্যার দিকে এটির গতি নেমে আসবে ১৭০ কি.মিতে (খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়)। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২১ মে) নাগাদ ঝড়টি শান্ত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ৩ থেকে ৫ মিটার উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
এখন ঝড়টির যে অভিমুখ রয়েছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ অঞ্চলের ওপর দিয়ে সীমান্তের ওপারে আসাম পর্যন্ত নির্দেশ করছে। ‘আম্পানের’ প্রভাবে সারাদেশে বজ্রঝড়-ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
ইইউডি/এএটি