বৃহস্পতিবার (২৮ মে) আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এখন যে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে সেটা আম্পান পরবর্তী স্ট্রং আবহাওয়ার কারণেই হচ্ছে। আগামী দুই থেকে তিনদিন এটা বলবৎ থাকবে।
‘আমরা এজন্যই সুনির্দিষ্টভাবে গত ২৫ মে থেকে সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত রেখেছি। নদীবন্দরেও সতর্ক সংকেত রয়েছে। আম্পানের এ প্রভাবের কারণে বর্ষার প্রভাবটা দেশে উঠে আসতে পারছে না। এটা কেটে গেলে ৩১ মে দিকে উপকূলে এবং মধ্য জুনে দেশের অভ্যন্তরে চলে আসবে বর্ষা মৌসুম। ’
তিনি বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে। কক্সবাজার, রাঙামাটি, চট্টগ্রামে পাঁচদিন তীব্র রোদ ছিল। তাই সেখানে পাহাড় ধসের শঙ্কা নেই। তবে আমরা দৃষ্টি রাখছি।
বন্যার শঙ্কাও আপাতত নেই বলে জানালেন তিনি। বলেন, সাধারণ দেশের বাইরে আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরাতে অতিভারী বর্ষণ হলে বন্যার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তবে এখন সেখানে তেমর বর্ষণ হয়নি। তাই আমরা আপাতত বন্যার আশঙ্কা করছি না।
আবহাওয়া অফিস জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বিরাজ করছে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য।
এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় দক্ষিণ/দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় (১০-১৫) কিমি, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ৩০-৪০ কিমি পর্যন্ত ওঠে যেতে পারে।
বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে রোববার পর্যন্ত।
আবহাওয়া অফিস সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেওয়া অন্য এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমি বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে দেশের অন্যত্র পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাঙামাটিতে, ১৩১ মিলিমিটার।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, দেশে এবং দেশের বাইরে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও বরাক উপতক্যায় বৃষ্টিপাত বাড়ায় বাড়ছে দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি। অনেক নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। সারিগাইন নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার উপর দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২০
ইইউডি/এএ