বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০ এর প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জীববৈচিত্র্য’। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির এ বছরের স্লোগান হচ্ছে ‘ইটস টাইম ফোর নেচার (সময় এখন প্রকৃতির)’।
জীববৈচিত্র্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে আমরা মানবজাতি বুঝে বা না বুঝে নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছি সব থেকে বেশি। বিশ্বব্যাপী মহামারী কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় সংকটের বিষয়কে সামনে রেখে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন আঙ্গিকে ভাবনার বিষয় হয়ে উঠবে।
জলবায়ু, পরিবেশ এবং মানুষ একে অপরের সঙ্গে অতি নিবিড়ভাবে যুক্ত। প্রত্যেকটি জীব প্রজাতির মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত নিবিড় পারস্পরিক সম্পর্ক। মানুষ তার দৈনিন্দন জীবনের প্রায় সব কিছুই পায় পরিবেশ থেকে। আবার এই মানুষই তার প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে সব থেকে বেশি ক্ষতি করে পরিবেশের।
মানুষ যতই আধুনিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হচ্ছে, পরিবেশের উপরে ততই চাপ পড়ছে। ফলে বাড়ছে কল কারখানার কালো বিষাক্ত ধোঁয়া এবং বর্জ্য। বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য, বাসস্থান এবং অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে বনাঞ্চল, নদী-নালা, খাল-বিল। সেই সঙ্গে বিলুপ্ত হচ্ছে এসব স্থানে বসবাস করা বিভিন্ন ধরণের ছোট বড় বন্যপ্রাণী।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ৩১ হাজার জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে, যা মোট প্রজাতির শতকরা ২৭ ভাগ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের করণীয় কি হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সাধারণ সম্পাদক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক সচিব প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, মানুষের জীবন ধারণের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার প্রায় সব কিছুই পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করে। মানুষ তার নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন বাঁচানোর তাগিদেই প্রকৃতি এবং পরিবেশকে রক্ষা করা প্রয়োজন। কারণ প্রকৃতি এবং জীববৈচিত্র ধ্বংস হলে মানুষের ধ্বংসও অনিবার্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যতই উন্নয়ন করি, দালানকোঠা, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করি না কেন, তা হতে হবে প্রকৃতি এবং পরিবেশ রক্ষা করে। পরিবেশের ক্ষতি করে, বনাঞ্চল ধ্বংস করে জীববৈচিত্রকে হুমকির মুখে ফেলে কোনো উন্নয়ন করা যাবে না। এটা করলে মানুষ তার নিজের বিপদ নিজেরাই বয়ে আনবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২০
আরকেআর