আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জুন মাসেই দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে দেখা দিতে পারে স্বল্পমেয়াদি বন্যা। ইতোমধ্যে পদ্মা ব্যতীত দেশের সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ দীর্ঘমেয়াদি এক পূর্বাভাসে এমনটি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, জুন মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বিস্তার লাভ করতে পারে। এতে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি মৌসুমী নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কতিপয় স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া জানিয়েছেন, পদ্মা ব্যতীত সব প্রধান নদ-নদীগুলোতে পানি সমতল বাড়ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক আবহাওয়া মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারতের আসাম, বরাক, ত্রিপুরা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কতিপয় স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু ও খোয়াই নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে। স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল।
তবে পানি বাড়লেও এখনও কোনো নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ওঠেনি।
পাউবোর পর্যবেক্ষণাধীন ৯৩টি স্টেশনের মধ্যে ৬০টিতেই পানির সমতল বেড়েছে। ২৮টিতে কমেছে। অপরিবর্তিত আছে ৫টি পয়েন্টে পানির উচ্চতা।
বাংলাদেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্যা হয়। অনেক সময় আবার আগাম বন্যাও হয়। তবে সবচেয়ে বড় বন্যাগুলো অতীতে হয়েছে বর্ষা মৌসুমেই। সর্বশেষ দেশে বড় বন্যা হয়েছে ২০১৬ সালে। সে সময় জুলাই ও আগস্টে দু’দফায় অন্তত ৩০টি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, জুনে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আভাস রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি বলতে পাঁচ থেকে ১০ দিন বোঝানো হয়। এ মাসে কৃষি আবহাওয়ায় দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন হবে ৩ দশমিক ২৫ থেকে ৪ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং গড় উজ্জ্বল সূর্য কিরণকাল হবে সোয়া পাঁচ থেকে সোয়া ছয় ঘণ্টা।
মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি বর্ষণ হয়েছে দেশে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ৫৬৯ মিলিমিটার। সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, ১৯২ মিলিমিটার। স্বাভাবিকের চেয়ে সবচেয়ে বৃষ্টিপাত রাজশাহীতে। এ বিভাগে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে মে মাসে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি বর্ষণ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২০
ইইউডি/আরআইএস/