ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

‘সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়াতে পরিকল্পনা নিচ্ছে মন্ত্রণালয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২০
‘সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়াতে পরিকল্পনা নিচ্ছে মন্ত্রণালয়’ ফাইল ছবি

ঢাকা: সুন্দরবনে বাঘের পরিমাণ দ্বিগুণ করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, বাঘ সুন্দরবনের রক্ষক।

এই বাঘের উপস্থিতির কারণেই সুন্দরবন এত বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয়। সুন্দরবনে বাঘ না থাকলে সেখানকার সামগ্রিক ইকো সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা তথা ঝড় ঝঞ্ঝা থেকে দেশকে বাঁচাতে সুন্দরবনের বিকল্প নাই। সুন্দরবন তথা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হলেও বাঘ সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।

বুধবার (২৯ জুলাই) ‘বাঘ বাড়াতে করি পণ, রক্ষা করি সুন্দরবন’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ব বাঘ দিবস-২০২০ উপলক্ষে অনলাইন আলোচনা সভায় সরকারি বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে প্রায় ১১৪টি বেঙ্গল টাইগার আছে। বন উজাড় ও অবৈধ শিকারের ফলে বেঙ্গল টাইগার বিশ্বে ‘বিপদাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রকৃতিতে বিদ্যমান বন্য বাঘের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৮৯০টি। বাঘ বিশেষজ্ঞদের মতে বাঘের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ার এই প্রবণতা চলমান থাকলে আগামী কয়েক দশকে পৃথিবী থেকে বাঘ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সুন্দরবনের বাঘ রক্ষার জন্য বন অধিদপ্তর তথা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বনমন্ত্রী বলেন, আবাসস্থলের উন্নয়ন ও নিয়মিত টহল প্রদান করে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য যথোপোযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার বাঘের আবাসস্থল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বর্তমানে সুন্দরবনের প্রায় ৫২ শতাংশ এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উভয় সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ, বাঘ ও শিকারি প্রাণী পাচার বন্ধ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মনিটরিং ইত্যাদির জন্য ২০১১ সালে একটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বনমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে সংবিধানে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী বাঘ ও হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর শিকারিদের শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে। বাঘ সংরক্ষণের জন্য দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৮-২০২৭  প্রণয়ন করেছে। লোকালয়ে বাঘ আসা মাত্র খবর আদান-প্রদান ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুন্দরবনের চারপাশের গ্রামগুলোতে বনবিভাগ ও স্থানীয় জনসাধারণের সমন্বয়ে টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। সুন্দরবন ও বাঘ সংরক্ষণের জন্য সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে নিয়মিত স্মার্ট প্যাট্রলিং কার্যক্রম চলছে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, বাঘ বাঁচাতে ও বাড়াতে তাদের বাসস্থান, খাবার ও বাইরের শিকারিদের কবল থেকে মুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনলাইন সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি এবং অতিরিক্ত সচিব ড. মো. বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২০
জিসিজি/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।