যারা প্রযুক্তি ব্যবহার করেন ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে, তা হার্ডকোর প্রোগ্রামিং হোক কিংবা জনপ্রিয় কোনো মোবাইল অ্যাপ তাদের মাঝে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। ২০২২ -এর শেষের দিক থেকেই কাস্টমারের সঙ্গে কোম্পানিগুলোর যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অন্তর্ভুক্তির একটা প্রাথমিক মাধ্যম সাড়া জাগানো চ্যাটবট। আশা করি ‘চ্যাটজিপিটি’ ঝড়ের তাণ্ডবে পাঠকও চ্যাটবট সম্পর্কে বেশ কিছুটা ধারণা এরই মাঝে পেয়েছেন।
চ্যাটবটের মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রভাব বিস্তার করে থাকবে ২০২৩ সালকে ছাড়িয়ে।
ধরে নিচ্ছি বা নিশ্চিতভাবে বলছি লেখাটি যারা পড়ছেন তারা চ্যাটবটের ফাংশন বা কার্যকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রাখেন। তাই টেকনোলজির অংশটি বলছি না।
সহজ কথায় বললে চ্যাটবট হলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাস্টমারের সঙ্গে রিয়েল-টাইমে অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে কথোপকথনে বা আলাপচারিতায় পারদর্শী প্রোগ্রামিং।
এগুলোকে এমনভাবে প্রোগ্রামিং করা যায় যাতে করে একজন কাস্টমারকে এদের প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশ্নোত্তর থেকে শুরু করে ‘পারচেজিং ডিসিশন’ বা কেনার সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষমতা থাকে।
এমনকি এই চ্যাটবটগুলোকে গ্রাহকের আচার আচরণের প্যাটার্ন সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করে তোলা যায় যাতে সে অনুযায়ী উত্তর দেয় বা রেসপন্স করে। অর্থাৎ এই প্রযুক্তি পার্সোনালাইজড বা ব্যক্তি স্বতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল।
আর একভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন বেশ ভালো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করবে। আর তা হলো ‘প্রেডিক্টিভ অ্যানালিটিক্স’। প্রেডিক্টিভ অ্যানালিটিক্স প্রক্রিয়া মেশিন ল্যাংগুয়েজ অ্যালগরিদম ব্যবহার করে বিজনেস ডেটা অ্যানালাইসিস করে আগাম বিজনেস রেজাল্ট ও ভবিষ্যতের কাস্টমার সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট বের করতে পারে।
এর ফলে কোম্পানিগুলো তাদের কাস্টমারের চাহিদা ও পছন্দের ধরন সহজেই বুঝতে পারবে। আর সেই চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমারের জন্য কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি তৈরি করতে পারবে। অন্যদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কাস্টমারের অভিজ্ঞতাকেও সমৃদ্ধ করবে।
আবার, কাষ্টমারের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভূমিকা পালন করবে। কাস্টমার ডেটা অ্যানালাইসিস করে কোম্পানিগুলো কাস্টমারের ছোটোখাটো সব অসুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে আর সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে তাদের প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের মানোন্নয়ন করতে পারবে। একটি ওয়েবসাইটের ইউজার ইন্টারফেস থেকে শুরু করে শিপিং ও সরবরাহ প্রক্রিয়ার সহজিকরণ সবই এর অন্তর্ভুক্ত।
শুধু এটুকুই নয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রক্রিয়ার খরচ কমিয়ে দেবে এবং আরো দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। যেমন ই-মেইল মার্কেটিং-এর ক্ষেত্রে কাস্টমারের ফিডব্যাক অ্যানালাইসিস করে মার্কেটিং ও কাস্টমার সাপোর্ট টিমকে সহায়তা করবে।
আগামী অন্তত ২-৩ বছর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পৃক্ত আছে এমন চ্যাটবট, প্রেডিকটিভ অ্যানালিটিক্স এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্র্যান্ডগুলো কাস্টমার এক্সপিরিয়েন্স, কমিউনিকেশনের মাধ্যমে তাদের বিজনেস গ্রোথ নিশ্চিত করার সুযোগ পাবে।
লেখক: সাংবাদিক, ডিজিটাল কন্টেন্ট ও পিআর বিশেষজ্ঞ
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
এসআইএস