একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের পথযাত্রায় তিনবার দেশভাগের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ, যার প্রভাবে আমাদের জাতীয় পরিচয় গঠনের প্রক্রিয়া বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছে। বারবার শুরু করতে হয়েছে শূন্য থেকে।
সম্প্রতি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে (আইইউবি) এক স্মারক বক্তৃতায় এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী লেখক, অনুবাদক ও সমালোচক অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং আইইউবির সাশিন সেন্টার ফর মাল্টিলিঙ্গুয়াল এক্সেলেন্স (এসসিএমএলই) ও ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা।
‘দ্য নাইন্টিন ফোর্টি-সেভেন পার্টিশন ফ্রম এ থ্রাইস-পার্টিশন্ড ন্যাশনাল পার্সপেকটিভ’ শীর্ষক বক্তৃতাটির আয়োজন করে এসসিএমএলই। এটি সাশিন অ্যানুয়াল লেকচার সিরিজের প্রথম বক্তৃতা। আগামীতে প্রতি বছর এ ধরনের একটি স্মারক বক্তৃতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে এসসিএমএলই-এর, যার উদ্দেশ্য সাহিত্য, ভাষাতত্ত্ব, শিক্ষা, নৃতত্ত্ব, সংস্কৃতি ও গণযোগাযোগসহ বিভিন্ন বিষয়ের পণ্ডিত ব্যক্তিদের সঙ্গে আইইউবির শিক্ষার্থীদের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ করে দেওয়া এবং উদার কলা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলা।
বক্তৃতায় ফকরুল আলম বলেন, ১৯০৫, ১৯৪৭ এবং ১৯৭১ সালের তিনটি দেশভাগের স্মৃতি কখনোই আমাদের মনন থেকে মুছে যেতে পারে না। তাই শিল্প, সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রে বারবারই দেশভাগের বিষয়টি ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, শিল্প, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে যেভাবে দেশভাগের দুঃখ, দুর্দশা ও আতঙ্ক চিত্রিত হয়, তা বাঙালিকে নিজের ঐতিহাসিক অবস্থান সম্পর্কে আত্মসচেতন করে তোলে। আমরা অনেক কিছু পরিষ্কার দেখতে পাই, বিশেষ করে নিজের অন্তর্নিহিত পরিচয়টি আমাদের কাছে শিল্প-সাহিত্যের মাধ্যমে মূর্ত হয়ে ওঠে। এই আত্মসচেতনতাই আমাদের জাতীয় পরিচয় গঠনে সাহায্য করে।
বক্তৃতা শেষে আলোচনায় অংশ নেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও লেখক তানভীর মোকাম্মেল এবং আইইউবির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা খান। বক্তব্য রাখেন আইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন, উপাচার্য তানভীর হাসান এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
অধ্যাপক ফকরুল আলমের জীবনী পাঠ করেন আইইউবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান। সঞ্চালনায় ছিলেন এসসিএমএলই-এর নির্বাহী পরিচালক এবং আইইউবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান খান। আইইউবির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
(বিজ্ঞপ্তি)
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
এইচএ/