ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

প্রান্তিক নারী-তরুণ-তরুণীদের ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আনতে যৌথ উদ্যোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
প্রান্তিক নারী-তরুণ-তরুণীদের ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আনতে যৌথ উদ্যোগ

ঢাকা: ‘ডিজিটাল ইনক্লুশন: সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ প্রজেক্ট’-এর মাধ্যমে দেশের ২৩ লাখ ৫০ হাজার প্রান্তিক নারী ও তরুণ-তরুণীদের ক্ষমতায়নে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল। উদ্যোগটির লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটাল স্বাক্ষরতা, দক্ষতা ও সহনশীলতা বাড়ানো এবং আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকা নারী ও তরুণ-তরুণীদের জন্য নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ প্রশিক্ষিত করা।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত ১৯, ২০ ও ২১ মে যথাক্রমে সাভার, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ সফর করেন টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি দল। প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর অভিন্ন অঙ্গীকার নিয়ে ডিজিটাল বৈষম্য নিরসনে এবং সমাজের সবার জন্য, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এই উদ্যোগ নিয়েছে।  

ডিজিটাল টুল ও সম্পদগুলো কীভাবে তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে তা জানার জন্য সফরের সময় প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রতিনিধিরা। পিছিয়ে থাকা এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার সুযোগ থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সব ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও অন্তর্ভূক্তির সংস্কৃতি গড়ে তুলছে এই প্রকল্প। ডিজিটাল দক্ষতা ও নিরাপদ অনলাইনে প্রশিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে আটটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এই প্রকল্পে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। জনগোষ্ঠীগুলো হচ্ছে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, চা বাগানের শ্রমিক, ট্রান্সজেন্ডার, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি (হাওর ও চর), জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী প্রধান পরিবার, পথশিশু এবং জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের মাধ্যমে চিহ্নিত অন্যান্য ব্যক্তিরা। প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল দক্ষতা ও নিরাপদ অনলাইনে প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরাসরি প্রশিক্ষণ দেওয়া, স্থানীয় নেতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং যুব সমাজের নেতৃত্বে ক্যাম্পেইন পরিচালনা, রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। বেসলাইন জরিপ এবং স্থানীয়দের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে প্রশিক্ষণের কনটেন্টগুলো সাজানো হয়েছে। কমিউনিটির সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলে প্রশিক্ষণ মডিউলগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা খুব বাস্তবসম্মত।  

প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, টেলিনর এশিয়ার হেড অব এক্সটার্নাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লার্নিং’র ডিরেক্টর জলি নূর হক, গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব, চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার (সিএইচআরও) সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ের ওয়াইইই অ্যান্ড ডিজিটাল এমাপাওয়ারমেন্ট’র অ্যাডভাইজর আলেক্সান্ডার লেটেলিয়ের, ডিরেক্টর অব পার্টনারশিপস অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলমপন্ট জোহান য়ুন এবং টেলিনরের হেড অফ সাসটেইনেবিলিটি জোহান মার্টিন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সমাজ গড়ার অগ্রযাত্রায় কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রান্তিক নারী ও তরুণ-তরুণীদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হচ্ছে, যেন তারা আজকের ডিজিটাল বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেন। এর ফলে তারা নিজেরা বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি তাদের কমিউনিটি ও কমিউনিটির বাইরের মানুষদের জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবেন।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, এই প্রকল্পটি অনলাইন নিরাপত্তা ও ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির মতো সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে কাজ করছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ তার অংশীদারদের নিয়ে সব স্তরের শিশু ও তরুণদের সমতা ও ন্যায্য অধিকারের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। এই উদ্যোগ সেই লক্ষ্য অর্জনের একটি মাইলফলক। গ্রামীণফোন ও টেলিনরের এই স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে আমরা আশাবাদী যে, বাংলাদেশে আমরা পরবর্তী প্রজন্মে যে পরিবর্তন আনতে চাই তা এমন বহুমুখী ও বহু পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই সম্ভব। তথ্য, দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের ক্ষমতায়ন অব্যাহত রাখব।

টেলিনর এশিয়ার হেড অব এক্সটার্নাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা বলেন, আজকের পৃথিবীতে যখন বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেটের জন্য মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভর করেন, তখন ডিজিটাল সাক্ষরতা একটি অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতা। এটি শুধু কীভাবে একটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হয় তা নয়, বরং প্রয়োজনীয় সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে, শিক্ষা উপকরণের উৎস হিসেবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণ করতে কার্যকর ও নিরাপদভাবে অনলাইন দুনিয়ায় বিচরণের দক্ষতা। ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবেন এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা। এই দক্ষতা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ঘটায় যেন তারা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেন।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ের অ্যাডভাইজার-ওয়াইইই অ্যান্ড ডিজিটাল আলেক্সান্দ্রা লেটেলিয়ের বলেন, প্রকল্পটির আওতায় এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৭ জন মোবাইল ফোনের ব্যবহার, অনলাইন নিরাপত্তা, ই-কমার্স এবং সরকারি সেবা নেওয়ার ওপর প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা পেয়েছেন। এছাড়া কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষের কাছেও আমাদের প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
এমআইএইচ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।