গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পেয়েছিলেন নতুন এক জীবন। ব্যাট হাতে ছুটিয়েছেন চার-ছক্কার ফুলঝুরি।
তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে ৫ হাজার ৬৬ রান করা হেলস বলেন, ‘তিন ফরম্যাটে ১৫৬ ম্যাচে নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা ছিল অনেক সম্মানের। আমি কিছু স্মৃতি ও কিছু বন্ধু বানিয়েছি যা আজীবন টিকে থাকবে এবং আমি মনে করি এটাই সরে যাওয়ার সঠিক সময়। খুব তৃপ্তি বোধ করছি যে, বিশ্বকাপ ফাইনালজয়ী ম্যাচটিই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা শেষ ম্যাচ ছিল আমার। ’
বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গত মার্চে বাংলাদেশে এসেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু পিএসএলে আগে থেকেই চুক্তিবদ্ধ থাকায় এই সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন ৩৪ বছর বয়সী হেলস। এই মাসের শেষ দিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা রয়েছে ইংল্যান্ডের। কিন্তু ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকায় এনিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল হেলসের।
দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রতিশ্রুতি ও ফ্র্যাঞ্চাইজির টুর্নামেন্টে খেলার ভারসাম্য বজায় রাখতে গত ৯ মাসে বেশ কয়েকবারই ইংল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেন হেলস। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের চাহিদা উপলব্ধি করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি।
২০১১ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে ইংল্যান্ডের জার্সিতে অভিষেক হয় হেলসের। তিন বছর পর ওয়ানডে ও ২০১৫ সালে টেস্টেও নাম লেখান তিনি। যদিও টেস্ট খেলেন কেবল ১১ টি। তবে রঙিন পোশাকে ছিলেন নিয়মিত মুখ। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের দুইবার দলীয় সংগ্রহের বিশ্ব রেকর্ড ভাঙার নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তার।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ৩ উইকেটে ৪৪৪ রানের রেকর্ড সংগ্রহের পথে ১৭১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন হেলস। দুই বছর পর সেই ট্রেন্টব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৮১ রানের নতুন রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড। যেখানে ১৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন হেলস। যদিও এর মাঝে ২০১৭ সালে ব্রিস্টলের নাইটক্লাবে মারামারিতে জড়িয়ে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। এরপর মাঠে ফিরলেও নিষিদ্ধ ড্রাগ নেওয়ায় বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে দল থেকে বাদ পড়েন ডানহাতি এই ওপেনার।
ইংল্যান্ডের হয়ে আর খেলার স্বপ্ন এরপর ছেড়েই দেন হেলস। কিন্তু ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে জনি বেয়ারস্টোর ইনজুরি জাতীয় দলের দরজা খুলে দেয় তার জন্য। বিশ্বকাপে শেষ দুই ম্যাচে দারুণ খেলার পর সেমিফাইনালে স্রেফ কচুকাটা করেন ভারতীয় বোলারদের। ৪৭ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত ৮৬ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। জস বাটলারের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন ১৭০ রানের জুটিতেই ১০ উইকেটের জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড।
বিশ্বকাপে এমন প্রত্যাবর্তনের পর আগামী আসরেও দলে ভাবা হচ্ছিল তাকে। কিন্তু ইতিটা এখানেই টানলেন হেলস। ৭০ ওয়ানডেতে ৬ সেঞ্চুরিসহ ২ হাজার ৪১৯ রান এবং ৭৫ টি-টোয়েন্টিতে ১৩৮.৩৫ স্ট্রাইকরেটে ২ হাজার ৭৪ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়:১৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৩
এএইচএস