শ্রীলঙ্কার তখন ১২ বলে দরকার ৯ রান, হাতে ৬ উইকেট। এমন সময় ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব বল তুলে দিলেন রিংকু সিংয়ের হাতে! যে কিনা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এর আগে বোলিং-ই করেননি।
তবে সূর্যকুমারের বাজি কাজে লেগে গেল। সেই পার্ট-টাইম অফ স্পিনার রিংকুই ১৯তম ওভারে মাত্র ৩ রানে তুলে নিলেন জোড়া উইকেট। এর মধ্যে কুশল পেরেরার (৩৪ বলে ৪৬ রান) উইকেটটি তো মহাগুরুত্বপূর্ণ। নাটকীয়তার তখনও বাকি।
শেষ ওভারে মাত্র ৬ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় স্বাগতিকদের সামনে। তাদের হাতে তখনও ৪ উইকেট আছে। এমন সময় সূর্য নিজেই বল হাতে তুলে নিলেন। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ৭০ ম্যাচে বলই হাতে নেননি তিনি। সেই সূর্যই রিংকুর মতো অফ স্পিনে জাদু দেখালেন। দ্বিতীয় বলে তিনি বিদায় করলেন কামিন্ডু মেন্ডিসকে।
পরের বলেই মহীশ থিকাসানাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন। আর তাতে সূর্য প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। শেষ ৩ বলে ৫ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে সুপার ওভারে নিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এবার অবশ্য ঝুঁকি নেননি সূর্য। বল তুলে দেন ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ৩ বলে ২ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। মাত্র ৩ রানের লক্ষ্য পরে সূর্য শুরুতেই চার হাঁকিয়ে পার করে দেন।
এ জয়ে ভারতের নতুন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও নতুন কোচ গৌতম গম্ভীর যুগ শুরু হলো দারুণভাবে। ৩ ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলো ভারত। যদিও তৃতীয় ম্যাচটি জিততে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে তাদের। দুই ম্যাচ জিতে নেওয়ায় এই ম্যাচে চারটি পরিবর্তন এনেছিল ভারত। কিন্তু আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩০ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পাওয়ার প্লে শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৪৮/৫।
শুভমান গিল (৩৭ বলে ৩৯ রান) ও রিয়ান পরাগ (১৮ বলে ২৬ রান) মিলে সেই ধাক্কা কিছুটা সামাল দেন। শেষদিকে ওয়াশিংটন ১৮ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন। ২০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৩৭ রান।
জবাবে সাবধানী শুরুর পর পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩৫ রান তুলতে পারে শ্রীলঙ্কা। পরে পাথুম নিশাঙ্কা (২৬) ও কুশল মেন্ডিসের ওপেনিং জুটি ৫৮ রান করে। রবি বিষ্ণুইয়ের বলে ফেরেন নিশাঙ্কা। তবে এরপর আবার কুশল মেন্ডিস (৪৩) ও কুশল পেরেরা (৪৬) মিলে ফের ৫২ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ১৬তম ওভারে মেন্ডিস বিদায় নেওয়ার পর খেই হারিয়ে ফেলে লঙ্কানরা। পরের কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের দেখাও পাননি।
এই ম্যাচ হেরে একটি লজ্জার রেকর্ডে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি (সুপার ওভারসহ) হারের রেকর্ড এখন তাদের দখলে। লঙ্কানরা হেরেছে ১০৫ ম্যাচে। আর বাংলাদেশ হেরেছে ১০৪ ম্যাচে। ১০১টি হার নিয়ে তিনে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জিম্বাবুয়ে ও নিউজিল্যান্ড হেরেছে ৯৯টি ম্যাচে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ডে সাকিবকে ছুঁয়েছেন সূর্য। দুজনেই ৫ বার করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। সবার উপরে আছেন বিরাট কোহলি (৬ বার)।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৪
এমএইচএম