মুড়িমুড়কির মতো উইকেট পড়তে দেখছে পার্থ টেস্ট। একদিনেই পড়েছে ১৭ উইকেট! এর মধ্যে মাত্র ১৫০ রানেই অলআউট হয়েছে ভারত।
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে ৬৭ রান তুলতে ৭ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনও ৮৭ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকররা। ১৮ রানে অ্যালেক্স ক্যারি এবং ৬ রানে মিচেল স্টার্ক অপরাজিত রয়েছেন।
এর আগে দিনের প্রথম দুই সেশনেই শেষ হয় ভারতের প্রথম ইনিংস। তারা খেলতে পারেনি ৫০ ওভারও। থেমেছে দেড়শ রানেই।
সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামানোর শুরুটা করেন মিচেল স্টার্ক ও হ্যাজেলউড। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই স্টার্কের বলে গালিতে থাকা ন্যাথান ম্যাকসুয়েনিকে ক্যাচ দেন যশস্বী জয়সওয়াল (০)। বাঁহাতি এই ওপেনার ৮ বল খেললেও তিনে নামা দেবদূত পাডিক্কাল খেলে ফেলেন ২৩ বল। তবুও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। হ্যাজেলউডের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে থাকা অ্যালেক্স ক্যারির হাতে।
এরপর কোহলিকেও (৫) নিজের শিকারে পরিণত করেন হ্যাজেলউড। তার খানিকটা লাফিয়ে ওঠা বলে কিছু বুঝতে না পেরে অনিচ্ছাকৃতভাবেই ব্যাট ছুঁইয়ে দেন কোহলি। প্রথম স্লিপে থেকে তার ক্যাচটি নিতে কোনো অসুবিধা হয়নি উসমান খাজার।
লাঞ্চের আগে লোকেশ রাহুলও (২৬) ফিরে গেলে আরও চাপের মুখে পড়ে যায় ভারত। যদিও সেই আউট নিয়ে বিতর্ক আছে। আল্ট্রা এজের স্পাইক কি বল-ব্যাট নাকি ব্যাট-প্যাডের সংঘর্ষের ছিল তা নিয়ে আলোচনা চলছে নেটিজেনদের মধ্যে। দিনশেষে সেই চাপ থেকে আর বেরোতে পারেনি সফরকারীরা। সপ্তম উইকেট জুটিতে ঋষভ পন্ত ও রেড্ডি কিছুটা সম্ভাবনা জুগিয়েছিলেন বটে। কিন্তু দুজনকেই সাজঘরের পথ দেখান প্যাট কামিন্স। ভাঙেন ৪৮ রানের জুটি। এর আগে জোড়া উইকেট শিকার করেন মিচেল মার্শ।
শেষ দিকে হ্যাজেলউড আরও দুই উইকেট নিলে দেড়শতে থামে ভারত। দলটির হয়ে ৫৯ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন রেড্ডি। এছাড়া পন্তের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। অজিদের হয়ে হ্যাজেলউডের শিকার সর্বোচ্চ চারটি উইকেট। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন স্টার্ক, মার্শ ও কামিন্স।
ভারতকে অল্পতে থামিয়ে নিজেরাও বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ওভারে প্রথম আঘাত হানেন ভারতের অধিনায়ক ও ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা। ১০ রান করে বুমরার বলে লেগ বিফোর হন অভিষিক্ত নাথান ম্যাকসুয়েনি। পরে টানা দুই বলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খাজা ও তারকা ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথকে বিদায় করেন বুমরা।
নিজের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে বুমরা ফিরিয়েছেন খাজাকে স্লিপে কোহলির ক্যাচ বানিয়ে (১৯ বলে ৮ রান)। পরের বলেই স্মিথ আউট হন এলবিডব্লুতে। এই অভিজ্ঞ অজি ব্যাটার ‘গোল্ডেন ডাক’র লজ্জা পেয়েছেন। এরপর হর্ষিত রানার দারুণ এক বলে বোল্ড হন ট্রাভিস হেড। এটি হার্ষিতের প্রথম টেস্ট উইকেট। ৩১ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার বিপর্যয় কাটাতে হাল ধরেছিলেন মার্নাস লাবুশেন। মাটি কামড়ে টিকে ছিলেনও কিছুক্ষণ। কিন্তু অন্যপ্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিল থামছিল না। ১৯ বলে ৬ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মিচেল মার্শ। ৩৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দিনের প্রথম ভাগে ভারত সমান উইকেট হারিয়েছিল ৫৯ রানে।
১৯৮০ সালের পর এই প্রথম ৪০ রান তোলার আগে ৫ উইকেট হারাল অস্ট্রেলিয়া। তবে তাদের দুর্ভোগ সেখানেই শেষ হয়নি। সিরাজ এরপর দ্বিতীয় আঘাত হানলে থামে লাবুশেনের প্রতিরোধ। একাই ৫২ বল খেলে মাত্র ২ রান করে তিনি পড়েন এলবিডব্লুর ফাঁদে। বুমরার চতুর্থ শিকার হন প্যাট কামিন্স। দলীয় ৫৯ রানে ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৪
এমএইচএম