ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ক্রিকেটাঙ্গনে দাপট দেখানো খুলনার পথে…

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
ক্রিকেটাঙ্গনে দাপট দেখানো খুলনার পথে… ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে: একটা সময়ে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগ থেকেই উঠে আসতেন জাতীয় পর্যায়ের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। তারও আগে জাতীয় দলে একচ্ছত্র দাপট ছিল ঢাকার ক্রিকেটারদের।

ক্রিকেটাঙ্গনে সে চিত্র এখন অতীত। এখন তো একচেটিয়া দাপট খুলনা বিভাগের।
 
এখান থেকে উঠে এসেছেন ক্রিকেটের একঝাঁক নক্ষত্র। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, ইমরুল কায়েস, রুবেল হোসেন, এনামুল হক, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেনরা দাপট দেখাচ্ছেন বিশ্ব ক্রিকেটে।

নতুনদের মধ্যে আছেন নুরুল হাসান সোহান। আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন দলের বোলিংয়ের হাল ধরে রেখেছিলেন। তার বাড়িও খুলনা বিভাগে।   সৈয়দ রাসেল, তুষার ইমরান, মঞ্জুরুল ইসলাম, মানজারুল ইসলামরাও জাতীয় দলে অবদান রেখে গেছেন। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের তারকা ক্রিকেটার সালমা খাতুন, আয়শা রহমান, রুমানা আহমেদরাও উঠে এসেছেন খুলনা থেকে। কিভাবে খুলনা থেকে এতো ক্রিকেটার উঠে আসেন? সেখানকার অবকাঠামো, সুযোগ-সুবিধা কেমন এসব বিষয় জানার কৌতুহল থেকেই অফিস-অ্যাসাইনমেন্টে খুলনার পথে যাত্রা।

জানিয়ে রাখা ভালো, খুলনার জিরো পয়েন্ট হয়ে প্রথমেই যাব সীমান্তঘেষা জেলা সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজের বাড়িতে।  

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে আমি চলেছি মাওয়া-কাওড়াকান্দি ঘাট হয়ে খুলনার পথে। অতীতে এই রুটে যাওয়ার অভিজ্ঞতায় অর্ধেক অংশ আমার চেনা। গুলিস্তান থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে বাসে ভাঙ্গা মোড় পর্যন্ত। বাকি পথ অচেনা। চেনা পথ নাকি খুব কাছের হয়!

কিন্তু ভেঙে ভেঙে যাওয়ার ফলে সেটা আর কাছের মনে হচ্ছে না। প্রতিটা জায়গাতেই কোনো কোনো কারণে দেরি হচ্ছে। দেরির কারণের মধ্যে প্রথমটি মিরপুর থেকে গুলিস্তান পৌঁছানোতে (মাত্রাতিরিক্ত জ্যামের কারণে) লাগে পাক্কা দুই ঘণ্টা। গুলিস্তান থেকে মাওয়া ঘাটে (৩৫ কি:মি দূরত্বে) পৌঁছালাম ঠিক সময়েই। আসল দেরিটা হলো কচ্ছপ গতির লঞ্চে। লঞ্চের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূর থেকে চোখ আটকে রাখলো পদ্মা সেতুর কাজ। দূর থেকে কেবল বোঝা যায় যন্ত্রপাতির সারি..... পাইলিংয়ের কাজ। এপার-ওপারে চলছে সংযোগ সড়কের কাজ।   পাথরের স্তুপ যেন রূপ নিয়েছে ছোট ছোট টিলায়। এমন সব দৃশ্য লঞ্চের যাত্রীদের পুলকিত করে। চরাঞ্চলের মানুষ অবাক নয়নে তাকিয়ে রয় আগামীর দিকে। যখন এই নদীর উপর দিয়েই সাই সাই করে উড়ে যাবে বিলাসবহুল বাস, ট্রেন। ২১ জেলার স্বপ্নের মিলন হবে এক সেতুতে।

নদীতে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের দল বেঁধে সাঁতার কাটার দৃশ্য আমাকে নিয়ে যাচ্ছিল শৈশবে, পদ্মার বুকে অপরূপ সুন্দর চর-এসব দৃশ্য উপভোগ করতে করতে মাওয়া ঘাট থেকে কাওড়াকান্দি ঘাটে অবশেষে পৌঁছালাম। তবে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৪০ মিনিট পর। পদ্মার পাশে ভাজা ইলিশ, ভর্তায় দুপুরের খাবার সেরে ভাঙ্গা মোর পর্যন্ত যাওয়ার প্রস্তুতি। যে পথটকুই কেবল চেনা আমার। এরপর কেবলই অচেনা স্থান, অচেনা মানুষ। আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতার রোমাঞ্চ নিয়ে ছুটেছি গন্তব্যে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, ৩০ মার্চ ২০১৬
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।