ঢাকা: আর মাত্র ১টি ম্যাচ নিজেদের করে নিতে পারলে ওয়ানডে ক্রিকেটে অনন্য এক মাইলফলক স্থাপন করতে পারবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শততম জয়ের হাতছানি মাশরাফি বাহিনীর সামনে।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সফরকারী আফগানিস্তানকে ৭ রানে হারিয়ে ৯৯তম জয় থলিতে পুড়েছে সাকিব-তামিমরা।
এবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি দিয়েই ঐতিহাসিক কাজটি সেরে ফেলতে চাইছেন লাল-সবুজের দল।
ম্যাচটিকে সামনে রেখে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘আমি মনে করি এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটি অর্জন হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা অবশ্যই প্রাণপণ চেষ্টা করবো। আর এ কাজটি আমরা দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়েই সেরে ফেলতে চাইছি। ’
শুধু শততম ওয়ানডে জয়ই কেন? বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়ানো নিজেদের ৩১৪তম ওয়ানডে ম্যাচে কাবুলিওয়ালাদের বিপক্ষে টাইগাররা সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের শেষ হাসি হাসতে পারলে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই পারবে ঘরের মাঠে টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের রেকর্ডট গড়তে।
দলীয় জয়ের পাশাপাশি এদিন হাতছানি থাকছে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নিজের নেতৃত্বের রেকর্ডকেও সমৃদ্ধ করার। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানদের হারিয়ে অধিনায়ক হিসেবে হাবিবুল বাশার সুমনের ৩০ জয়কে টপকে বাংলাদেশের ৩১তম জয় এনে দিয়েছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। সেই জয়ে তার গায়ে উঠেছে সফলতম অধিনায়কের তকমা। ৩২তম জয় নিয়ে এবার সেই রেকর্ডকে আরও সমৃদ্ধ করার মিশনে নিশ্চয়ই এতটুকু পিছপা হবেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অটোমেটিক চয়েস মাশরাফি।
একটি নয়, তিন তিনটি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে চাপে হয়তো সংকুচিত হয়ে যেতেন যেকোনো অধিনায়কই। কিন্তু মাশরাফি তেমনটি হননি বরং বেশ প্রাণবন্তই আছেন। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এলেন যথেষ্ট ফুরফুরে মেজাজে।
অবশ্য মাশরাফির ফুরফুরে না থাকার কোনো কারণই নেই। ১০ মাস পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেও অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে কৌশল বের করে আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানেডেতে নিশ্চিত হারের মুখ থেকে দলকে এনে দিয়েছেন উজ্জীবনী জয়।
আফগানিস্তান আইসিসির সহযোগী দেশ আর বাংলাদেশ টেস্ট খেলুড়ে। দুই দেশের মধ্যকার ম্যাচে চাপে বাংলাদেশ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কেননা হেরে গেলেও আফগানদের হারানোর কিছু নেই।
তবে প্রথম ম্যাচ জয়ে সেই চাপ কেটে গেছে বলে জানালেন দলনেতা মাশরাফি। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ নিজেদের করে নেওয়ার জ্বালানি হিসেবে প্রথম ম্যাচের জয়টি কাজে দেবে বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।
‘খেলার ভেতরে থাকলেও যে কোন সিরিজের প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে জিতে বের হয়ে যেতে পারলে মানসিকভাবে অনেকটাই চাপমুক্ত থাকা যায়। আফগানিস্তানের সাথে আমাদের প্রথম ম্যাচটিও তেমন ছিল। আশা করি পরের ম্যাচগুলোতে আমাদের ওপর এই চাপ আর থাকবে না’, বলেন মাশরাফি।
এদিকে প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশের সাথে বুক চিতিয়ে লড়াই করা আফগানরাও দ্বিতীয় ম্যাচটিকে দেখছে সিরিজে ফেরার ম্যাচ হিসেবে। সংবাদ সম্মেলনে এসে আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান তেমনটিই বললেন। ‘প্রথম ওয়ানডেতে যে ভুলগুলো আমরা করেছি সেগুলো শুধরে নিয়ে এই ম্যাচ দিয়েই সিরিজে ফিরতে চেষ্টা করবো। ’
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের সামনে যেখানে শুধুই সিরিজে ফেরার চ্যালেঞ্জ সেখানে বাংলাদেশের সামনে শততম ওয়ানডে ম্যাচ জয়, টানা পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজ এবং মাশরাফির ৩২তম ম্যাচ জয়ের মতো তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এবার দেখার পালা চাপ সামলে কতটা দক্ষ হাতে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারেন টাইগার বাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৬
এইচএল/এমজেএফ