ঢাকা: ইংল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পেল না বিসিবি একাদশ। জস বাটলার ও মঈন আলীর ব্যাটে ভর করে চার উইকেটের জয় ছিনিয়ে নেয় সফরকারী দলটি।
স্কোর: বিসিবি একাদশ-৩০৯/৯ (৫০ ওভার)
ইংল্যান্ড একাদশ-৩১৩/৬ (৪৬.১ ওভার)
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করা বিসিবি একাদশ নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তোলে। জবাবে ২৩ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রান করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা।
৩১০ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ওপেনিংয়ে ৭২ রানের জুটি গড়েন জেসন রয় ও জেমস ভিন্স। কিন্তু এবাদত হোসেনের অসাধারণ বোলিংয়ে দু’জনই আউটের শিকার হন। ভিন্সের ব্যাট থেকে আসে ৪৮ রান।
মাঝে বেন ডাকেট, জনি বেয়ারস্টো ও বেন স্টোকস দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফলে ১৭০ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ইংলিশ শিবির। ডাকেটকে বোল্ড করেন শুভাগত হোম। আর বেয়ারস্টো কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের শিকার হন। পরে স্টোকসকে সরাসরি বোল্ড করেন ইংল্যান্ড সিরিজে ডাক পাওয়া আল-আমিন হোসেন।
এর পরের গল্পটা শুধুই ইংল্যান্ড একাদশের। স্বাগতিক বোলারদের ওপর শাসন করে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক বাটলার ও অলরাউন্ডার মঈন। এই জুটি ১৩৯ রান করে দলকে জেতান। যদিও ম্যাচ যখন টাই ঠিক তখনই ৭০ রান করা মঈনকে আউট করেন সানজামুল ইসলাম। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান ৫১ বলে আট চার ও দুই ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান। বাটলার ৬৪ বলে তিন চার ও চারটি ছক্কায় ৮০ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করেছে বিসিবি একাদশ। দলের হয়ে হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিকুর রহিম। এছাড়া অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা নাসির হোসেনও দারুণ ব্যাটিং করে বড় স্কোরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এদিন মাত্র ৯১ বলে ১১টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১২১ রান করে থামেন বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল। শতক পূর্ন করেন ৮১ বলে। এর আগে ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুটি দর্শনীয় বাউন্ডারি মেরে ভালো ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দেন ইমরুল। উইকেটে সাবলীল থেকে একের পর এক বাউন্ডারি মেরে বিসিবি একাদশের ইনিংসকে এগিয়ে নেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৫ রানের মাথায় ওপেনিংয়ে ইমরুলের সঙ্গী সৌম্য সরকার ৭ রান করে ক্রিস ওকসের বলে জস বাটলারের গ্লাভসে ধরা পড়েন। বেশ কিছুদিন অফফর্মে থাকা সৌম্য এ ম্যাচেও নিজেকে চেনাতে পারলেন না। পরে ইমরুলের সঙ্গে জুটি বেধে তরুণ ক্রিকেটার নাজমুল হাসান শান্ত ৩৬ রান করে যখন ফেরেন দলের রান তখন ১২০।
জাতীয় দলের ম্যাচে রান খরায় ভোগা মুশফিককে এ ম্যাচে হঠাৎই সবাই আবিস্কার করেন। তবে ৫৭ বলে পাঁচ চারের সাহায্যে ৫১ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। পরে বেন স্টোকসের বলে আউট হন।
এদিকে টাইগারদের শেষ কয়েকটি সিরিজে জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকলেও একাদশে সুযোগ না পাওয়া নাসির এ ম্যাচে দলনেতা হিসেবেই মাঠে নামেন। আর ৪৫ বলে চারটি চার ও একটি ছ্ক্কায় ৪৬ রানের দৃঢ় এক ইনিংস খেলে নির্বাচকদের বোঝান তিনি ফুরিয়ে যাননি।
বিসিবি একাদশে টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানদের সামনে নিজেদের ইনিংস আরও বড় করার সুযোগ ছিল। তবে শেষ দিকে শুভাগত হোম, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান ও আল-আমিনরা উইকেটে থিতু হতে পারেননি।
ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পান পেসার ক্রিস ওকস। এছাড়া দুটি করে উইকেট তুলে নেন ডেভিড উইলি ও বেন স্টোকস। একটি উইকেট লাভ করেন স্পিনার আদিল রশিদ।
আগামী ০৭ অক্টোবর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। ঘরের মাঠে টানা সাতটি সিরিজ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ০৪ অক্টোবর, ২০১৬
এমএমএস