২০১৬ সালও খুব খারাপ যায়নি। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল খেলা, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের মতো সাফল্য এসেছে গত বছরটিতে।
কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের হারে সমালোচনার তীর হাথুরুসিংহের দিকে। দলগড়া নিয়ে তার ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ কথাও বলছেন অনেকে।
কোচকে ঘিরে এসব সমালোচনা থামাতে বললেন সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন। দলের সঙ্গে এবার ম্যানেজার হিসেবে নিউজিল্যান্ড না গেলেও লম্বা সময় এ দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে বুধবার (০৪ জানুয়ারি) মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খোলোমেলা কথা বলেছেন তিনি।
গত দুই বছরে বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে হাথুরুসিংহের অবদান তুলে ধরে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সচরাচর খুব ভালো কোচ পাইনা। নামকরা অনেক কোচ এসে ঘুরে গেছেন, যাদের নামে হয়তো বিশ্ব কাঁপতো একসময়। কিন্তু, তারা কেউ কিন্তু আমাদের সাফল্য এনে দেননি। আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। এটা কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশ দলকে বদলে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অপরিসীম। অবশ্যই খেলেয়াড়রা সবার আগে। তাদের পারফরম্যান্সের জন্যই বাংলাদেশ জেতে। তারপরও একটা দল বানানো কিন্তু চাট্টিখানি কথা না। অনেক ভালো ভালো প্লেয়ার থাকে সেটাকে একটা দল বানিয়েছেন ওনি। ‘টিম বাংলাদেশ’ যেটা আমরা বলি সেটা বানিয়েছেন ওনি। ’
‘চন্ডিকা খুব ভালো জানে ওর কাজটা। আমাদের জাতিগত একটা স্বভাব আমরা যখন ভালো করি মুখ লুকিয়ে ফেলি, কথা বলি না। বাংলাদেশ যখন হারে তখন খুঁজে বের করি কিভাবে দলটাকে টেনে আরো নিচে নামানো যায়! সত্যিই যদি আমরা বাংলাদেশ দলের সাপোর্টার হই, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনুসরণ করি তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশের বিপদের সময় সবার পাশে থাকার কথা। ’-যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।
একাদশ নির্বাচন টিম ম্যানেজমেন্টের উপর ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার সীমিত জ্ঞান থেকে বলি, আমরা যখন হারবো দু:সময়ে যেন এসব বিশ্লেষণ, কাটাছেড়া কম হয়। ইতিবাচক আকারে যদি আলোচনা হয় ভালো হবে। কাকে খেলাচ্ছে, কেন খেলাচ্ছ-এটা টিম ম্যানেজমেন্টের উপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো। ’
চারদিকে সমালোচনায় হতাশা নিয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সাবেক ক্রিকেটোররাও এ নিয়ে কথা বলছে তাতে আমি খুবই হতাশ। তারা হাথুরুসিংহের ব্যাপারে কথা বলছেন। হাথুরুসিংহের কোয়ালিটি নিয়ে কেউ যদি কথা বলেন তাহলে তারা বোকার মতো কথা বলছে। হাথুরুসিংহে দারুণ একজন কোয়ালিটি কোচ, ওনি জেনে-বুঝেই সব করেন। তার প্ল্যানিংগুলো খুবই ভালো। কাকে, কেন খেলানো হয়েছে এটা টিম ম্যানেজমেন্টের উপরই থাক। এটা সবার দায়িত্ব না। কে খেলবে এটা নিয়ে এতো কথা বলা ঠিক না। সমালোচনা সবখানেই হয়। আমার মনে হয় যৌক্তিক সমালোচনা হলে ভালো হয়। এভাবে কথা বলা মানে প্লেয়ারদের উপরও চাপ প্রয়োগ করা। ’
খালেদ মাহমুদ মনে করেন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে না পারাতেই ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তবে তার আশা একটি জয় পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, ‘সেরা দলটাই খেলেছে। আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারিনি। এটাই বড় কথা। সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে হয়তো শুনে অনেকে হাসবে আমরা ২-১ এ ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও অবাক হতাম না। যাই হোক আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। এখনও আমাদের দুইটা টি-টোয়েন্ট আছে টেস্ট সিরিজ আছে। একটা জয় পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ’
‘আমি মনে করি আমরা গত আড়াই বছর ধরে যে ক্রিকেট খেলছিলাম। ড্রেসিংরুমে একটা স্লোগান ছিল আমরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলবো। আমরা ভয় পাবনা। শতভাগ দিয়ে খেলবো। সেই ভয়ডরহীন ক্রিকেট আমরা খেলতে পারিনি। খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষায় সেটা মনে হয়েছে। হারার চাপ থাকবেই। সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হলে স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে হবে। ব্যাটিংয়ে আরেকটু ভালো করতে পারলে নিউজিল্যান্ডকে হারানো সম্ভব’-যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ৪ জানুয়ারি, ২০১৭
এসকে/এমআরএম