ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

টাইগারদের শেষ বেলার আফসোস

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
টাইগারদের শেষ বেলার আফসোস ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে করা ৩৩৮ রানের জবাবে দারুণ ব্যাট করছিল বাংলাদেশ। তবে, শেষ তিন-চার ওভারে গিয়ে পর পর তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ২১৪ রান। উইকেটে অপরাজিত থেকে তৃতীয় দিন শুরু করবেন সাকিব আল হাসান আর দলপতি মুশফিকুর রহিম।

এর আগে ম্যাচের প্রথম দিন লঙ্কানদের ৭ উইকেট ফেলে দিয়ে শততম টেস্ট রাঙিয়ে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিল মুশফিকের দল। দ্বিতীয় দিন লঙ্কানদের ৩৩৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।

শুরুটাও করেছিল দুর্দান্ত। তবে, শেষ কয়েক মিনিটেই ম্যাচের স্কোরবোর্ড পাল্টে দেয় সবকিছু।

সাকিব ১৮ আর মুশফিক ২ রানে অপরাজিত থাকেন। ওপেনিং পার্টনারশিপে আসে ৯৫। তবে, তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের বিদায়ে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমান। এই জুটি থেকে আসে ৬২ রান।

ব্যাটিংয়ে নেমে অর্ধশতক থেকে মাত্র ১ রান দূরে থাকতে এলবিডব্লুর শিকার হন তামিম। ৯৫ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙে লঙ্কানদের ব্রেকথ্রু এনে দেন লঙ্কান অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ। প্রথমে আবেদনে সাড়া দেননি আলিম দার। রিভিউ নেন হেরাথ। রিভিউতে সফল হয়ে উল্লাসে মাতে লঙ্কান শিবির। তামিম ৯১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে তার ইনিংসটি সাজান।

তামিমের বিদায়ের মধ্য দিয়ে চা বিরতিতে যায় দু’দল। শেষ হয় দিনের দ্বিতীয় সেশন। দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭.৪ ওভারে এক উইকেটে ৯৫।

টানা তিন ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন সৌম্য। গল টেস্টের (৭১ ও ৫৩) পর কলম্বোতে দলের ঐতিহাসিক টেস্টে হাফসেঞ্চুরি উদযাপন করেন এ বাঁহাতি ওপেনার। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় স্পিনার লক্ষণ সান্দাকানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬১। ১২১ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে সৌম্য তার ইনিংসটি সাজান।

দিনের খেলা শেষ হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন ওভার আগে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। দলীয় ১৯২ রানের মাথায় বিদায় নেন ইমরুল। সান্দাকানের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৭৮ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩৪ রান করেন ইমরুল। পরের বলেই বিদায় নেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাইজুল ইসলাম। প্রথমে এলবির আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। তাতে, বিদায় নিতে হয় তাইজুলকে।

চতুর্থ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হয়ে শেষ বেলায় আসেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সাব্বির। লাকমলের বলে ডি সিলভার হাতে ধরা পড়েন তিনি দিনের খেলা ২.২ ওভার বাকি থাকতে। সাজঘরে ফেরার আগে ৫৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে সাব্বির করেন ৪২ রান। দলীয় ১৯৮ রানের মাথায় বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেট হারায়।

এর আগে সেঞ্চুরিয়ান দিনেশ চান্দিমালের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম দিনের করা সাত উইকেটে ২৩৮ রান নিয়ে প্রথম সেশন পার করে লঙ্কানরা। স্কোরবোর্ডে যোগ হয় আরও একশ’ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে সবকটি উইকেট হারিয়ে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩৮। শেষ তিন উইকেটে আসে ১৪৩।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩০০ বল মোকাবেলায় ১৩৮ রানের অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন চান্দিমাল। ১০৬তম ওভারে তাকে মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমনি বনে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। নবম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। দশম উইকেট জুটিতে ৩৩ রান তোলেন দুই টেলএন্ডার লাকমল ও লক্ষণ সান্দাকান (৫ অপ.)। লাকমলকে (৩৫) সৌম্য সরকারের তালুবন্দী করে লঙ্কান ইনিংসের সমাপ্তি টানেন পেসার শুভাশিস রায়। অলআউট হওয়ার আগে ১১৩.৩ ওভার ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) চান্দিমাল-হেরাথ জুটি (৫৫) ভেঙে দ্বিতীয় দিনের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন লঙ্কান অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ (২৫)।  দলীয় স্কোর আড়াইশ’র ঘরে যেতেই অষ্টম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। নবম উইকেটে লাকমলকে নিয়ে আরও ৫৫ রান যোগ করেন চান্দিমাল।

এর আগে প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলোকস্বল্পতার কারণে কলম্বোর পি সারা ওভালে প্রথম দিনে ৮৩.১ ওভারের খেলা হয়। লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৩৮। ৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে মাঠ ছাড়েন দিনেশ চান্দিমাল ও অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ (১৮ অপ.)। একাই দলকে টেনে তোলেন ৮৬ রানে অপরাজিত থাকা চান্দিমাল।

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে ঐতিহাসিক টেস্টের প্রথম দিনটি দারুণ কাটে বাংলাদেশের। দলীয় ৭০ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপের মুখেই পড়েছিল স্বাগতিকরা। দিমুথ করুণারাত্নে ৭, কুশল মেন্ডিস ৫, উপুল থারাঙ্গা ১১ ও আসিলা গুনারাত্নে ১৩ রান করে আউট হন। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার (৩৪) সঙ্গে ৬৬ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন চান্দিমাল। নিরোশান ডিকওয়েলাকে (৩৪) নিয়ে আরও ৪৪ রান যোগ করেন তিনি। ৯ রানে বিদায় নেন দিলরুয়ান পেরেরা। ১৯৫ রানে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে।

প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট লাভ করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দু’টি করে নেন মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান ও শুভাশিস রায়। বাকি উইকেটটি তাইজুল ইসলামের।

দুই ম্যাচ সিরিজে সমতায় ফিরতে চোখ রাখছে টিম বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় গল টেস্টে (৭-১১ মার্চ) ২৫৯ রানে হার মানতে হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ১৬ মার্চ, ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।