এদিকে, পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার কারণে কোনোভাবেই ক্ষতিপূরণ পিসিবিকে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
এছাড়া, পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা প্রসঙ্গে পিসিবি থেকে বিসিবি আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব পায়নি বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
কিছু দিন আগেই পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় লাহোরে। বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজিত সেই আসরের সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল আরব আমিরাতে। শুধু ফাইনালটিই হয়েছিল লাহোরে। তাতে, বড় তারকা বিদেশি ক্রিকেটাররা অংশ নেয়নি। পিএসএলের ফাইনালে আটজন বিদেশি তারকা খেলতে গিয়েছিল পাকিস্তানে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এনামুল হক বিজয়ও খেলেছেন।
জালাল ইউনুস জানান, ‘পিসিবি চাইলে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে পারে। তাতে বাংলাদেশের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই পিসিবির। গত মাসে পিএসএলের ফাইনালের আগে ওখানের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তা পরিদর্শক কমিটিও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেদন ‘ইতিবাচক’ কিছু দেখা যায়নি। পাকিস্তান সফর থেকে সরে আসার পিছনে সেটাও একটা বড় কারণ। তাছাড়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, আইসিসিও এগুলোর উপর নজরদারি করছে। ’
আগামী মে মাসে নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু, তাতে সম্মতি জানায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ফলে, আগামী জুলাইয়ে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন পিসিবির চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান।
বোর্ড প্রেসিডেন্ট শাহরিয়ার খান জানান, ‘আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে দুই বার গিয়েছিলাম। আবারো সফরের বিষয়টি আমরা ভেবে দেখবো। আর বিসিবি যদি পাকিস্তানকে বাংলাদেশ সফরে নিতে চায় আমরা হয়তো তাদের কাছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চাইব। আমরা দুই বোর্ড একসঙ্গে বসবো। আগামী আইসিসি মিটিংয়ের আগে দুবাইয়ে বিসিবির বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বসতে চাই। সম্ভাব্য সফরের বিষয়ে কথা বলবো। এছাড়া, আমাদের আর্থিক ক্ষতির জন্যও তাদের অবগত করব। ওরা আমাদের সঙ্গে ২০১৫ সালে নিরাপত্তার শঙ্কা থাকায় খেলতে আসতে রাজি হয়নি। আমরা অবশ্যই আবারো তাদের পাকিস্তান সফরে আনতে চাই। কিন্তু, বিসিবি দল না পাঠালে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ’
দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য লাহোরে খেলতে যাওয়ার প্রস্তাব করেছিল পিসিবি। নিজেদের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে বাংলাদেশের সাথে ম্যাচ খেলা অনেক বড় একটি সুযোগ বলে মনে করছেন পিসিবির কর্মকর্তারা।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানে আইসিসির কোনো মেগা ইভেন্ট বসেনি। যায়নি কোনো টেস্ট ক্রিকেট খেলুড়ে দল। শুধু জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ নারী দল পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল। ক’দিন আগে পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ ক্যারিবীয়রা প্রত্যাখ্যান করে। আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ থাকলেও সে সময়ে আবারো পাকিস্তানের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সফরটি বাতিল করেছিল আইরিশরা।
এর আগে ২০১৫ সালে দুটি সফর থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে পিসিবিকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে বিসিবি। ২০১২ সালে প্রতিশ্রুত সফরে না যাওয়ার কারণে ২০১৫ সালের এপ্রিলে পিসিবিকে তিন লক্ষ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয় বিসিবি। পরের মাসে পাকিস্তান বাংলাদেশ সফরে এসেছিল। সেই সফরে এসে টাইগারদের কাছে নাকানি-চুবানি খেয়েছিল পাকিস্তান। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ আর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হেরেছিল পাকিস্তানিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ৩১ মার্চ ২০১৭
এমআরপি