উচ্ছ্বাস আর আনন্দের কমতি নেই সাইফের শৈশবের প্রশিক্ষকদের মধ্যেও। তাদের হাত ধরেই সাইফের ক্রিকেটের হাতেখড়ি।
কথা হয় সাইফের ছেলেবেলার প্রশিক্ষক ফেনী ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম অপুর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, ভাবতেই ভালো লাগে আজ সাইফ দেশের হয়ে জাতীয় দলে খেলছে। সাইফের আজকের এই উত্থানের পেছনে ফেনী জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাব এবং আরও অনেকের অবদান রয়েছে।
সাইফের বিষয়ে এ প্রশিক্ষক বলেন, সাইফ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে- কারণ তার মধ্যে রয়েছে আত্মবিশ্বাস আর সাহস। আমি তার মধ্যে দেখেছি ভালো জায়গা করে নেওয়ার অদম্য স্পৃহা এবং মনোবল, তার সঙ্গে পরিশ্রম তো আছেই।
ভালো টেম্পারমেন্টও আছে। সাইফ চেষ্টা করে বোলিংয়ে ভালো করতে, না পারলে ব্যাটে তা পুষিয়ে দিতে। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্য আছে তার। এখন দরকার তার সঠিক পরিচর্যা। আশা করি দেশ এ সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারের যত্ন নেবে, যোগ করেন শরীফুল।
সাইফের অপর প্রশিক্ষক ফেনী জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখেছি সাইফ ভীষণ পরিশ্রমী। দীর্ঘদিন খেলে ভালো টেম্পারমেন্টও হয়েছে। আশা করি, এ ম্যাচের মাধ্যমে সাইফ দলে জায়গা পাকাপোক্ত করে নেবে। আমরা যে স্বপ্ন দীর্ঘদিন ধরে মনের মধ্যে লালন করছি আজ তা বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। সাইফের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা আর শুভকামনা রইলো।
এছাড়াও শুভকামনা জানিয়েছেন সাইফের বয়সভিত্তিক দলের প্রশিক্ষক আলী আশ্রাফ ইমন, কামরুল হাসান রানা। তারাও চান সাইফ ভালো খেলে দলে স্থায়ী জায়গা করে নিক।
জেলায় ভালো একটি স্টেডিয়াম এবং পর্যাপ্ত অনুশীলনের মাঠ থাকলে এ জেলায় আরও অনেক সাইফ উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন সাইফের প্রশিক্ষকরা।
ইমার্জিং টিম এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলেছেন সাইফউদ্দিন। তিনি ব্যাটে ও বলে দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলে এসেছেন তিনি।
বিসিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ দল ইমার্জিং কাপে সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে গেছে। বাংলাদেশ দলে বরাবরই পেস বোলার অলরাউন্ডারের অভাব। সাইফের মধ্যে সেই অভাব পূরণের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন অনেকে। শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ দল। বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের সঙ্গে ২২ মার্চ ডাম্বুলায় হয় ম্যাচটি। এ ম্যাচে ছিলেন সাইফউদ্দিন। ম্যাচটিতে ২৬ রানে এক উইকেট নিয়েছিলেন। ব্যাট হাতে দুই রানে অপরাজিত থাকেন।
এরপর ইমার্জিং কাপে অংশ নিতে দেশে ফিরে আসেন সাইফউদ্দিন। এই টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট পেয়েছেন। ব্যাট করেছেন দুই ম্যাচে। তাতে ৬৮ রান তার। ঘরের মাঠে যুব বিশ্বকাপে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেন ফেনীর এই ক্রিকেটার।
পরে বিপিএল ও বিসিএলে নৈপুণ্য দেখান। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, ডানহাতি বোলার এই অলরাউন্ডারের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৩ ম্যাচে ৩৪ এর উপর গড়ে ৮৩৩ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৭। লিস্ট-এ ম্যাচেও ফিফটি আছে। এই দুই ধরনের ক্রিকেটে উইকেট ৫৯টি। সর্বশেষ দুটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ইস্ট জোনের হয়ে ১১ উইকেট নেন। একটি অপরাজিত ফিফটির সঙ্গে মোট সংগ্রহ ৯০ রান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
এসএইচডি/আরআর/এমজেএফ