৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৩ ওভার ৫ বলেই পাকিস্তানের দেওয়া ১৩৪ রানের টার্গেট পেরিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে দিয়ে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হল ‘ছোট’ সিংহরা।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানি অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে আগের ম্যাচে হ্যাট্রিক করা ফার্নান্দো আর করুনারত্মের বোলিংয়ের সামনে কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি পাকিস্তান।
প্রথম ১০ ওভারে দুইজনের স্পেলে পাকিস্তান হারায় ইমরান বাট, হোসাইন তালাত আর হারিস সোহাইলকে। ১২ তম ওভারে উইকেট কিপারের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সামারাকুন ফেরান বিলাল আসিফকে।
এরপরেরটা সেহান জয়সুরিয়ার তোপ। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ছয়টি ওয়ানডে খেলে উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত হাত ঘুরিয়ে উইকেট-তাও একটি। সেই সেহান জয়সুরিয়া ফাইনালে নিলেন তিন উইকেট।
বৃষ্টিস্নাত ফাইনালে ৪২ রানেই টফ অর্ডার হারিয়ে ফেলা পাকিস্তান এগুচ্ছিল অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান আর খুশদিল শাহের ব্যাটে। নিজের প্রথম ওভার ও দলীয় ২২তম ওভারের শেষ বলে ২৬ রানে বোল্ড করে দিলেন রিজওয়ানকে। বলটা এতোই বিশ্বমানের ছিল রিজওয়ান বুঝতেই পারলেন না। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে আবারও আঘাত জয়সুরিয়ার। এবার ফেরালেন উইকেটে জমে যাওয়া খুশদিল শাহকে (২০)। পরে ওই জয়সুরিয়াকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জাফর গোহর করুনারত্মের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন। ইনিংসের মাঝখানের ছয় ওভারের স্বপ্নের এক স্পেলে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানের ইনিংসে ধসটা নামিয়ে দেন এই জয়সুরিয়া।
সেখান থেকে অস্টম উইকেট জুটিতে হাম্মাদ আজম ও ওসামা মিরের ৪৭ রান পাকিস্তানকে ১০০ ফেরোতো সহায়তা করে।
তবে ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা আরেক ডি সিলভা ওসামা মিরকে (২৬ রান) বোল্ড করে দিলে জুটি ভাঙতেই আর এগুইনি পাকিস্তানের ইনিংস। নিজের শেষ ওভারে বল করতে এসে অ্যামিলা আপনসু স্টাম্পিয়ের ফাঁদে ফেলেন হাম্মাদ আজমকে (২৫ রান)। এরপরের ওভারেই গোলাম মুদাস্সরকে বোল্ড করে ডি সিলভা ফেরালে পাকিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ১৩৩ রানেই। সবমিলিয়ে ৪২ ওভার এক বল খেলে পাকিস্তান।
মাত্র ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মেরে খেলতে থাকে শ্রীলঙ্কান দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সামারিকইরা ও আবিষ্কা ফার্নান্ডো। সামিন গুলের করা পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ইমরান বাটকে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফার্নান্দো। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও একদিকে আগলে রাখেন সামারিকইরা।
কিন্তু দলীয় ৯৮ রানে সামারিকইরা আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। তবে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ডি সিলভা আর ভিতঙ্গার অবিচ্ছিন্ন ৩৮ রানের জুটি শ্রীলঙ্কাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় টস যখন হচ্ছিল তখন-পুরো আকাশ দখল করে রেখেছে মেঘেদের দল। তাতে অনুমিতই ছিল বৃষ্টি আসছেই। অপেক্ষাটা দীর্ঘ হলো না। ম্যাচ শুরু হতে ১০ মিনিট দেরি। বৃষ্টির ফোটা পড়া শুরু মাঠে। সেমিফাইনাল পর্যন্ত বৃষ্টিহীন হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ফাইনালে এসে বৃষ্টির দেখা ফেল ইমার্জিং টিমস এশিয়ান কাপ ক্রিকেট।
এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই উইকেটসহ আউটফিল্ড ত্রিফলে ঢেকে ফেলা হয়। আম্পায়াররা কয়েক দফায় এসে উইকেট দেখে যান। বৃষ্টির কারণে ফাইনাল ম্যাচ শুরু হতে ৩০ মিনিট বিলম্ব হয়। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পর আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের আকাশে।
বাংলাদেশ সময় : ২০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
টিএইচ/টিসি