ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

প্রতিরোধ গড়েছে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
প্রতিরোধ গড়েছে অস্ট্রেলিয়া ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

এশিয়ার মাটিতে এর আগে মাত্র একবারই ২০০ রান টপকে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৬ সালে ফতুল্লায়। অস্ট্রেলিয়া বধে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২২১ রান তুলে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে, জয়ের জন্য সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার টার্গেট ২৬৫। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি ২১ ওভারে ২ উইকেটে ৭৭ রান তুলেছে অজিরা। ডেভিড ওয়ার্নার ৫৫ রানে, স্মিথ ১৩ রানে উইকেটে আছেন।

অজিদের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর ম্যাট রেনশ সতর্ক থেকেই দিনের শেষ সেশনে শুরু করেন। দলীয় ২৭ রানের মাথায় মেহেদি ফিরিয়ে দেন রেনশকে। ইনিংসের নবম ওভারে এলবির ফাঁদে পড়ার আগে রেনশ করেন মাত্র ৫ রান। পরের ওভারেই সাকিব ফেরান উসমান খাজাকে। তাইজুলের তালুবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ১ রান। দলীয় ২৮ রানেই দুই উইকেট হারায় অজিরা।

দ্বিতীয় দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান করে শেষ করেছিল টাইগাররা। যেখানে ৮৮ রানের লিড পেয়েছিল মুশফিক বাহিনী। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লায়ন ছয়টি, অ্যাস্টন অ্যাগার দুটি আর পেসার প্যাট কামিন্স একটি উইকেট লাভ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের সর্বোচ্চ স্কোরার তামিম ইকবাল (৭৮)।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দিনের প্রথম সেশনে নাথান লায়নের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম। ২২ বলে ব্যক্তিগত ৪ রান করেন তিনি। লায়নের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ইমরুল কায়েস। নাথান লায়নের লাফিয়ে উঠা বলে দ্বিতীয় স্লিপে ডেভিড ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে ফেরেন আগের ইনিংসে ০ রানে ফেরা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৮০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন তারা। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুতই বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের ৫৩তম ওভারে কামিন্সের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসবন্দি হন তামিম। আম্পায়ার আউট না দিলেও অস্ট্রেলিয়ার রিভিউয়ে তামিমকে ফিরতে হয়। বিদায়ের আগে ১৫৫ বলে আটটি বাউন্ডারিতে তামিম করেন ৭৮ রান। ১৩৫ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এদিন ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এরই সঙ্গে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের সমান সর্বোচ্চ ২৪টি হাফসেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন তিনি। ১১২ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে হাফসেঞ্চুরি করেন তামিম। চলতি টেস্টেই ব্যাক টু ব্যাক ফিফটির দেখা পেলেন এ তারকা।

প্রথম সেশনে ৯০ রান তোলে বাংলাদেশ। ইনিংসের ৫৬তম ওভারে আবারো বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানেন নাথান লায়ন। আগের ইনিংসে ৮৪ রান করা সাকিবকে কামিন্সের হাতে ধরা দিতে বাধ্য করেন। থিতু হওয়ার আগে ঝুঁকি নিয়ে লায়নকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ব্যর্থ হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বাঁক নেওয়া বলের টাইমিং মিসের মাশুল দেন। সাজঘরে ফেরার আগে সাকিব করেন মাত্র ৫ রান। ১৪৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেট হারায়।

দারুণ খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিম দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদায় নেন। সাব্বিরের সাথে জুটি গড়ে ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়া মুশফিক রানআউট হওয়ার আগে করেন ৪১ রান। তার ১১৪ বলে সাজানো ইনিংস ছিল একটি বাউন্ডারি আর একটি ওভার বাউন্ডারি। দলীয় ১৮৬ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা সাব্বির ইনিংসের ৬৮তম ওভারে লায়নের বলে শট নেন। বল গিয়ে বোলারের হাতে লেগে উইকেটে আঘাত করে। সে সময় নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা মুশফিক উইকেটের বাইরে ছিলেন। টিভি রিপ্লেতে মুশফিককে আউট ঘোষণা করা হয়।

মুশফিকের বিদায়ের পরের ওভারেই বিদায় নেন নাসির হোসেন। অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাসির। ১৮৬ রানেই বাংলাদেশ সপ্তম উইকেট হারায়। একই রানে ফেরেন সাব্বির রহমানও। এক ওভার পর লায়নের বলে হ্যান্ডসকম্বের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ৩৬ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কায় ২২ রান করা সাব্বির। শেষ দিকে মিরাজ ২৬ আর শফিউল ৯ রান করেন।

দুই ম্যাচ টেস্টের প্রথমটিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬০ করার পর অস্ট্রেলিয়াকে ২১৭ রানে বেঁধে দিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। যেখানে ৪৩ রানের লিড পায়। পরে টাইগাররা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৪৩ রানে সৌম্য সরকারের উইকেট হারায়। ১৫ রান করে অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে আউট হন এ ওপেনার। তবে ৭০ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন আরেক ওপেনার তামিম। তার সঙ্গে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন তাইজুল।

এর আগে অজিদের স্বল্প রানে আটকে দিতে দারুণ ভূমিকা পালন করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি একাই ৫ উইকেট নেন। নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নেওয়া চতুর্থ বোলার হিসেবে রেকর্ড গড়েন। ৩ উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি পান তাইজুল। সফরকারী অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান আসে ওপেনার ম্যাট রেনশর ব্যাট থেকে। ৪১ রান করেন টেলএন্ডার ব্যাটসম্যান অ্যাগার।

বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে তামিম ও সাকিবের ব্যাটে ২৬০ রান করতে সমর্থ হয়। ৭১ রান করেন তামিম আর ৮৪ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। অজি বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট পান স্পিনার নাথান লায়ন, অ্যাগার এবং পেসার প্যাট কামিন্স।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ২৯ আগস্ট, ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।