গায়ে সাদা গেঞ্জি, মাথা পেঁচানো গামছাতে। আর অবশ্যই পরনে-লুঙ্গি।
৫০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকা!
একটা একটা রান বাড়ে-আর উচ্ছ্বাসের পারদ বাড়তে থাকে এই ‘বন্ধু দলের’। বয়স সবারই ২০-এর মধ্যে। তারা এসেছেন কর্ণফুলী নদীর ওপার থেকে। কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নেই তাদের বাস। সদ্যই কলেজের গণ্ডিতে ঢুকেছে জীবন।
লুঙ্গি পরে মাঠে আসবেন- এমন চিন্তাটা কীভাবে মাথায় ঢুকলো? আটজনের একজন সরোয়ার জামাল হাসতে হাসতে বলেন, লুঙ্গি প্রতিটি বাঙালির অন্যতম প্রিয় পোশাক। এতেই আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি বেশি। তাই ভাবলাম মাঠে লুঙ্গি পরে গেলে কেমন হয়- সেই চিন্তা থেকেই এতোকিছু।
কথা হলে তারা বলেন, প্রথম টেস্টে জয়ের পর আমরা সবাই একসঙ্গে বসলাম। কীভাবে মাঠে গিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দেওয়া যায় সে বিষয়ে কথা বলতে। আমাদের মাথায় ছিল ভিন্নভাবে মাঠে গেলে নজরও কাড়া যাবে।
সেই বৈঠকেই একযোগে সিদ্ধান্ত আসে- লুঙ্গি পরেই মাঠে আসবেন তারা। পরে স্থানীয় বাজার থেকে নতুন লুঙ্গি, নতুন গেঞ্জি আর নতুন গামছা কেনেন। খরচ পড়ে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।
এরপর লুঙ্গি, গেঞ্জি পরে আর মাথায় গামছা পেঁচিয়ে সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নৌকাযোগে কর্ণফুলী নদী পেরিয়ে সোজা মাঠে।
এমন পোশাক পরায় ‘লাভবানও’ হয়েছেন তারা। অন্যরা যেখানে টিকিটের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘরেছেন মাঠের বাইরে, সেখানে তাদের হাতে টিকিট মিলেছে লাইনে দাঁড়াতেই-একেবারে ন্যায্য দামে!
ওই দলের আরাফাত হোসেন বলেন, আমাদের দেখে পুলিশ নিজ থেকেই ডেকে কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে সহযোগিতা করেছেন। নির্ধারিত ৫০ টাকা দিয়েই কিনেছি।
এই আটদলের অন্যরা হলেন, ইয়াছিন, সাইফুল, সাজ্জাদ, ফয়সাল আর নজরুল। দ্রুতই উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ। কিন্তু বন্ধুদের দল এতেই টাল খেতে চায় না! অপেক্ষা করতে চান শেষ পর্যন্ত।
বন্ধুদের বক্তব্য, এখনও মাত্র খেলার প্রথমদিন। দেখবেন আমরাই শেষ হাসি হাসবো। ইনশাআল্লাহ ২-০-ই হবে সিরিজের ফল।
আগের কয়েকদিন চট্টগ্রামের আকাশে ছিল টানা বৃষ্টি। সোমবার সকাল থেকেই একেবারে ঝকঝকে আকাশ। কড়া রোদের প্রকোপ বাড়তে থাকে বেলার সঙ্গে মিলিয়ে। খোলা আকাশের নিচে তাই গরমে হাঁসফাঁস করছেন দর্শকরা।
গরমের এমন দিনে লুঙ্গি আর সাদা গেঞ্জি- এই পোশাকই তো মানায়!
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/আইএ