কথাগুলো তিনি বলতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুতিকাগারকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার বাতিকের জন্য।
তিনি জানান, ‘খেলাধুলা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা কখনই সুফল বয়ে আনে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের গঠনতন্ত্রের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক দেয়া রায় বিসিবি নিজেদের পক্ষে দাবী করে আগামী ২ অক্টোবরের বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ নির্ধারণ করেছিল।
যা বানচাল করতে রীতিমতো উঠেপড়ে লেগেছেন মোবাশ্বের। সেই লক্ষ্যে তিনি রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন। মোবাশ্বের হোসেনের করা রিটের প্রেক্ষিতে জামিলের অভিমত, ‘যে মামলাটা করা হয়েছিল সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আলাদত জুলাই মাসে যে রায় দিয়েছে, সেই রায়ে বলা হয়েছে, বিসিবি তার গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধন যে কোন কিছু নিজেরা করতে পারবে। সেজন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদন লাগবে না। তবে যেহেতু তারা দেশের ক্রীড়ার অভিভাবক তাই শুধু তাদের অবহিত করতে হবে। বিসিবির কাউন্সিলররা মিলে যা করবে সেটাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। তারপরে তো আর কথা থাকে না। তারপরেও কেন মামলা মোকদ্দমা?’
একই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই বিসিবির গঠনতন্ত্র নিয়ে যে মামলা করা হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেছিল যে সেই মামলায় যদি ২০০৮ এর গঠনতন্ত্রে ফিরে যেতে হয় তাহলে তো আইসিসির নিয়ম কানুন মানা যায় না। তাহলে আইসিসির অনুদান বন্ধ হয়ে যায়। আইসিসি থেকে আমাদের যে ১৬ লাখ ডলার পাওয়ার কথা সেই টাকা পাওয়ার পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ ওই টাকাটা আইসিসির গঠনতন্ত্রের সঙ্গে মেলে না। আইসিসির সিদ্ধান্তনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছিল যে আইসিসির নিয়মরক্ষার জন্য এখন নির্বাচনটা হয়ে যাক, পরে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেব। যেটা তারা গত জুলাই মাসে দিল। তো সমস্যা কোথায়?’
জামিলের প্রশ্ন বিসিবির গঠনতন্ত্রের বৈধতা নিয়ে আদালত রায় শোনাল গত জুলাই মাসে কিন্তু তারা তাৎক্ষণিক রিট আপিল না করে সেপ্টেম্বরে কেন করলো? ‘আমি ওনাদের কাছে জানতে চাইছি আদালতের দেয়া রায়ের এতদিন পরে ওনারা এসব কথা বলছেন কেন? আদালতের রায়ের পরপরই কেন ওনারা এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না? সেপ্টেম্বর মাসে এসে কেন ওনারা বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে? ওনাদের কোনো আপত্তি থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে রিট পিটিশিন করার কথা। দুই-তিন মাসে কেন এমন প্রতিক্রিয়া?’
পাশাপাশি বিসিবির গঠনতন্ত্র নিয়ে জুলাইয়ে আদালতের দেয়া রায়কে সঠিক বলেও উল্লেখ করলেন এই সাবেক বোর্ড পরিচালক, ‘আমি মনে করি গত ২৩ জুলাই আদালত যে রায়টি দিয়েছে সেটা সঠিক। এই জন্যই সঠিক, কারণ এনএসসি বিসিবির কোনো কিছুই বহন করে না। মাঠ রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে সব কিছুর পরিচর্যা ও পরিচালনা সবকিছুই বিসিবি তার নিজের টাকায় করে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে একটা টাকাও বিসিবিকে দেয়া হয় না। বরং বিসিবিই তাদের আয়ের রাজস্ব এনএসসিকে দেয়। ’
হামলা মামলা করে নয়, খন্দকার জামিল বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থেকেই থাকে তাহলে তার সমাধান আদালতে না গিয়ে নিজেদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব, ‘যদি কোনো সমস্যা থাকে নিজেরা বসে আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করে মিটমাট করা যায়। আদালত পর্যন্ত যেতে হবে কেন? যদি আমরা সবাই ক্রিকেট ভালোবাসি তাহলে আদালতে গিয়ে কেন মারামারি করবো? নিজেরা বসে আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা যেতে পারে। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা যায়। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি