আগের দিনের ৩ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করে মুশফিকুর রহিমের দল। তৃতীয় সেশনে গিয়ে ৩২০ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৮৯.১ ওভার খেলা বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের ইনিংসে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তামিম ইকবাল। আন্দিল পেহলুকওয়াওয়ের বলে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। তিনি ৬৭ বলে ছয়টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৪১ করে বিদায় নেন। তামিম-মুমিনুল জুটিতে আসে ৫৫ রান। এরপর জুটি গড়েন মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহ। দলকে টানতে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার ব্রাডম্যান খ্যাত মুমিনুল হক কেশব মহারাজের বলে মার্কারামের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন। ১৫০ বলে ১২টি বাউন্ডারিতে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন মুমিনুল। দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে একাদশে জায়গা না পেলেও পরের টেস্টে ফিরে করেছিলেন ৩১ ও ২৯। দক্ষিণ আফ্রিকায় একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে করেছিলেন ৬৮ ও ৩৩। মুমিনুল মূল ম্যাচে নেমে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বাদশ অর্ধশতক স্পর্শ করেন ১১২ বলে। দলীয় ২২৭ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দলীয় ২৯২ রানের মাথায় বিদায় নেন সাব্বির রহমান। ব্যক্তিগত ৩০ রান করে ফেরেন তিনি। অলিভিয়েরের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৬ বলের ইনিংসে সাব্বির চারটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান। দলীয় ২৯২ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। দলীয় ৮২তম ওভারের প্রথম বলে কেশব মহারাজকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের ফলোঅন কাটান মাহমুদুল্লাহ। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদুল্লাহ। নতুন বল নিয়ে মরনে মরকেলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১২৪ বলে ১১টি চার আর একটি ছক্কায় তিনি করেন ৬৬ রান। তাসকিন ব্যাটিংয়ে নেমে রানআউট হয়ে ফেরেন ০ রানে।
তৃতীয় সেশনের শুরুর ওভারেই কেগিসো রাবাদার বলে এলগারের তালুবন্দি হন ৮ রান করা মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ ব্যাটসম্যান হয়ে ২ রান করা শফিউল স্লিপে মহারাজের বলে আমলার তালুবন্দি হন। মোস্তাফিজ ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। মহারাজ তিনটি, রাবাদা দুটি আর মরনে মরকেল দুটি উইকেট পান।
এর আগে সফরকারীদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ৭ রান করে কেগিসো রাবাদার লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা মেরে স্লিপে মার্কারামের তালুবন্দি হন ইমরুল। দলীয় ১৬ রানের মাথায় বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায়। ইমরুলের পর বিদায় নেন ২৯ বলে চারটি বাউন্ডারিতে ২৫ রান করা লিটন দাস। মরনে মরকেলের বলে হাশিম আমলার তালুবন্দি হন তিনি। দলীয় ৩৬ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাময়িক বিপর্যয় সামলে নিয়ে দলকে টেনে তুলতে থাকা দলপতি মুশফিকুর রহিম কেশব মহারাজের বলে মার্কারামের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৫৭ বলে সাতটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৪৪ রান। ১০৩ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের নিচে চাপা পড়া বাংলাদেশ ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষ করে ৩ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলে।
এর আগে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৬ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ৪৯৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। তেমবা বাভুমা ৩১ এবং দলপতি ফাফ ডু প্লেসিস ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অভিষেক ইনিংসেই তরুণ ওপেনার মার্কারাম ৯৭ রান করেন। দলীয় ১৯৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। মুমিনুল-মেহেদির প্রচেষ্টায় রান আউট হওয়ার আগে মার্কারাম ১৫২ বল খেলে ১৩টি চারের সাহায্যে তার ইনিংসটি সাজান।
হাশিম আমলা টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরির দেখা পান। দলীয় ৪১১ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় দ. আফ্রিকা। ২০০ বলে ১৭টি চার আর একটি ছক্কায় ১৩৭ রান করে শফিউলের বলে মিরাজের তালুবন্দি হন আমলা। তাতে ভাঙে ২১৫ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। মোস্তাফিজের করা দলীয় ১৩১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বিদায় নেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলা ডিন এলগার। ব্যক্তিগত ১৯৯ রানের (নবম সেঞ্চুরি) মাথায় মুমিনুলের তালুবন্দি হন তিনি। তার আগে ৩৮৮ বলে ১৫টি চার আর তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে এলগার তার ইনিংসটি সাজান। দলীয় ৪৪৫ রানের মাথায় এলগারের বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজ ২৭ ওভারে একটি, শফিউল ২৫ ওভারে একটি উইকেট নেন। তাসকিন ২৬ ওভার, স্পিনার মিরাজ ৫৬ ওভার, মাহমুদুল্লাহ ৫ ওভার, মুমিনুল ২ ওভার আর সাব্বির ৫ ওভার বল করেও কোনো উইকেট পাননি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
এমআরপি