ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দায়টা কী শুধুই মুশফিকের?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৭
দায়টা কী শুধুই মুশফিকের? ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

পচেফস্ট্রুমে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানের লজ্জার হারের পর ব্লুমফন্টেইনে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ইনিংস ও ২৫৪ রানের তিক্ত হারের স্বাদ পেল সফরকারী বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ও ২৪৮ রানে হারার পর এই প্রথম ইনিংস ব্যবধানে হারলো টাইগাররা।

টেস্টে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ড। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে প্রোটিয়াদের জয় ছিল ইনিংস ও ২০৫ রানে।

 

ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ আজ এশিয়ার পরাশক্তির যে তকমা পেয়েছে টানা দুটি টেস্টে তাদের এমন পারফরম্যান্সের জন্য দায়ী কে? শুধুই কী মুশফিক? নাকি দলের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটসম্যান ও নির্বিষ বোলাররাও? যদি বলি সবাই তাহলে কী এতটুকু ভুল হবে? বোধ করি, না।  ‘এখনি বিসিবি মুশফিকের বিকল্প চিন্তা করছে না’

ধরেই নিচ্ছি প্রথম টেস্টের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় টেস্টেও টস জিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক। সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের ভূমিকা কী ছিল? হতাশার ব্যাটিং ছাড়া তারা কেউই কিছু উপহার দিতে পারেননি। আর বোলাররা? মনে হলো তারা এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। সবার মধ্যেই একটা শিক্ষানবিশ মনোভাব।  

প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুলে ৭৭ ও মাহমুদুল্লাহর ৬৬ রানের পর দ্বিতীয় টেস্টে লিটন দাসের ৭০ রানের ইনিংসটি বাদ দিলে কোনো ব্যাটসম্যানই নামের সুবিচার করতে পারেননি।

পেশির ইনজুরিতে দ্বিতীয় টেস্টে ছিটকে যাওয়া তামিম ইকবাল প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে করেছেন ৩৯ ও ০।  অতিমাত্রায় স্নায়ুচাপে ভোগা ওপেনার ইমরুল কায়েসের চার ইনিংসে সংগ্রহ যথাক্রমে ৭, ৩২, ২৬, ৩২। আর দিনের পর দিন রান খরায় থেকেও সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার দ্বিতীয় টেস্টে দলে জায়গা পেয়ে আবারো ব্যর্থ (৯ ও ৩)।

মুমিনুল প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৭ রানে দলের মধ্যমনি হয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরেছেন শূন্য হাতে। দ্বিতীয় টেস্টে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪ ও ১১। হতাশ করতে বাকি রাখেননি আরেক সিনিয়র সদস্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও।  

পচেফস্ট্রুমে প্রথম ইনিংসে ৬৬ রান করে দলকে টেস্টের স্বপ্ন দেখানো এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯ রান করে আউট হন। আর ব্লুমফন্টেইনে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের ম্যাচে খেললেন ৪ ও ৪৩ রানের ইনিংস।

প্রথম টেস্টে টিম কম্বিনেশনের কারণে বাদ পড়া এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭০ রানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে থামলেন মাত্র ১৮ রানে। এদিকে অনেকটা ‘জোরপূর্বক’ টেস্ট ব্যাটসম্যান হতে চাওয়া সাব্বিরের চার ইনিংসে সংগ্রহ ৩০, ৪, ০ ও ৪ রান।  

আসুন এবার বোলারদের দিকে তাকাই। নাম তার মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার স্পেশালিস্ট। সেই কাটার স্পেশালিস্টকে আপন ছন্দে খুঁজে পাওয়া গেল না পুরো টেস্ট সিরিজে। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট ও দ্বিতীয় ম্যাচে সন্তুষ্ট থেকেছেন উইকেটশূন্য থেকেই।

আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ যাকে সবাই স্পিডস্টার নামে ডাকেন সেই তাসকিন প্রথম টেস্টে একটি উইকেটের দেখাও পাননি! শফিউল ইসলাম প্রথম টেস্টে ৩টি নিলেও বাজে আচরণের দায়ে দ্বিতীয় টেস্টে দল থেকে বাদ পড়েছেন।

দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ পাওয়া অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট। তবে তুলনামূলক মন্দের ভালো বোলিং করেছেন শুভাশিস রায়। প্রথম টেস্টে উপেক্ষিত থাকা এই পেসার দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের চার উইকেটের তিনটিই নিজের দখলে নিয়েছেন।

দিনশেষে দলের এমন তিক্ত হারে এরা কেউই কী দায় এড়াতে পারবেন? পারবেন হয়তো। কেননা সব দায়তো একা অধিনায়ক মুশফিকের। টিম ম্যানেজমেন্ট, বিসিবি পরিচালক, নির্বাচকদের কথায় তাই তো মনে হচ্ছে!

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ৮ অক্টোবর, ২০১৭
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।