টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সিলেটের দলপতি নাসির হোসেন। টস হারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪৫ রান।
কুমিল্লা নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল। অপরদিকে, বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে খেলেছিল সিলেট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নাসির-সাব্বিরদের সিলেট ঢাকাকে হারায় ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর দুইটায় শুরু হয় সিলেট-কুমিল্লার ম্যাচটি। কুমিল্লা দলে পায়নি তাদের আইকন তামিম ইকবালকে। ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচে নেই তামিম। দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আফগানিস্তানের তারকা মোহম্মদ নবী। ব্যাটিংয়ে নেমে কুমিল্লার শুরুটা মোটামুটি ভালোই হয়। ওপেনিং জুটিতে লিটন দাস আর ইমরুল কায়েস তুলে নেন ৩৬ রান। সিলেটের দলপতি নাসির হোসেনের বলে পঞ্চম ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে ইমরুল করেন ১২ রান। তার ১১ বলের ইনিংসে ছিল দুটি বাউন্ডারির মার। আরেক ওপেনার লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে ২১ রান। দুটি বাউন্ডারি আর একটি ওভার বাউন্ডারিতে কুমিল্লার এই ওপেনার ১৯ বল মোকাবেলা করেন।
তিন নম্বরে নামা মারলন স্যামুয়েলস ব্যাট হাতে না দাঁড়ালে লো-স্কোর নিয়েই মাঠ ছাড়তে হতো কুমিল্লাকে। ক্যারিবীয়ান এই তারকা শেষ ওভারে বিদায় নেন। তার আগে ৪৭ বলে করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৬০ রান। তার ইনিংসে ছিল দুটি চার আর তিনটি ছক্কা। চার নম্বরে নামা জন বাটলার ব্যক্তিগত ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। অলোক কাপালি ১৯ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ২৬ রান। কুমিল্লার দলপতি মোহাম্মদ নবী ব্যক্তিগত ৫ রানে বিদায় নেন। ডোয়াইন ব্রাভো ১১ রানে এবং সাইফুদ্দিন ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
সিলেট দলপতি নাসির প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন। ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় একটি উইকেট তুলে নেন। ৪ ওভারে ২২ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ৪ ওভারে ৩০ রান খরচ করে আরও দুটি উইকেট পান ক্রিসমার সান্তোকি। আবুল হাসান রাজু ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। লিয়াম প্লাংকেট ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে নেন ১টি উইকেট।
১৪৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটের দুই ওপেনার নিজেদের প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও দলকে ভালো শুরু পাইয়ে দেন। দলীয় ৭৩ রানের মাথায় ভাঙে ওপেনিং জুটি। ক্যারিবীয়ান তারকা ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার ২৯ বলে ৫টি চার আর দুটি ছক্কায় ৩৬ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার শ্রীলঙ্কান উপুল থারাঙ্গা রানআউট হয়ে ফেরার আগে করেন ৫১ রান। টানা দুই ম্যাচে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া এই লঙ্কান ৪০ বল মোকাবেলা করে ৫টি বাউন্ডারির সাথে দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান।
তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমান ব্যক্তিগত ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। দলপতি নাসির হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ১৮ রান। রস হোয়াইটলি ১০ রান করে রানআউট হন। ব্রাভোর করা শেষ ওভারে সিলেটের দরকার হয় ১০ রানের। প্রথম বলে শুভাগত হোম ৭ রানে সাজঘরে ফেরেন। নুরুল হাসান সোহান শেষ ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে নিজের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। ওভারের তৃতীয় বলে সোহান সিঙ্গেল নেন। চতুর্থ বলে লিয়াম প্লাংকেট নেন আরেকটি সিঙ্গেল। পঞ্চম বলে সোহান বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৩ বলে ১৩ রান করে সোহান অপরাজিত থাকেন।
কুমিল্লার আফগান স্পিনার রশিদ খান ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। আরেক আফগান মোহাম্মদ নবী ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় নেন দুটি উইকেট। আরফাত সানি, আল আমিন হোসেন, সাইফুদ্দিন আর মারলন স্যামুয়েলস কোনো উইকেট পাননি। ৩.৫ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান ডোয়াইন ব্রাভো।
সিলেট সিক্সার্স: উপুল থারাঙ্গা, আন্দ্রে ফ্লেচার, রস হোয়াইটলি, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন (অধিনায়ক), শুভাগত হোম, নুরুল হাসান সোহান, তাইজুল ইসলাম, আবুল হাসান, লিয়াম প্লাংকেট, ক্রিসমার সান্তোকি।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মারলন স্যামুয়েলস, জস বাটলার, অলোক কাপালী, ডোয়াইন ব্রাভো, মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, রশিদ খান, আরাফাত সানি, আল আমিন হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ৫ নভেম্বর ২০১৭
এমআরপি