বিপিএলের ইতিহাসে নিজেরই করা সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড ভেঙে ৬৯ বলে ১৪৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন গেইল। স্ট্রাইক রেট ২১১.৫৯।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আরেকটি ‘গেইল শো’ উপভোগ করলেন দর্শকরা। চারদিন আগে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ৫১ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত থাকেন ‘ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব’। ছাড়িয়ে যান সাব্বির রহমানকে। গতবার রাজশাহীর জার্সিতে ১২২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাব্বির।
সর্বোচ্চ রানস্কোরারের তালিকায় নাম্বার ওয়ান পজিশনে উঠে এসেছেন গেইল। ১১ ম্যাচে দুই ফিফটি ও দুই সেঞ্চুরিতে তার রান ৪৮৫। ৩৮১ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছেন ঢাকার এভিন লুইস।
গেইলকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৪৩ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। শিরোপা লড়াইয়ে টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ঢাকা দলপতি সাকিব আল হাসান।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসকে (৩) ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু এনে দেন সাকিব। এরপর ঢাকার বোলারদের ওপর দিয়ে রীতিমতো স্টিমরোলার চালান ৩৮ বছর বয়সী গেইল। ম্যাককালামকে নিয়ে গড়েন ২০১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি।
পঞ্চম আসরের লিগ পর্বে দু’বারের মুখোমুখি দেখায় রংপুর ও ঢাকা দু’দলই এক ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। প্রথমবারের মতো বিপিএল ফাইনাল খেলছে রংপুর রাইডার্স। ২০১৫ সালে তারা প্লে-অফ খেলেছিল। সেবার অধিনায়ক ছিলেন সাকিব অাল হাসান।
রংপুর ও ঢাকা দু’দলই লিগ পর্বের নাম্বার ওয়ান দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চূড়ান্ত মঞ্চের টিকিট কাটে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে তামিমদের মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯৫ রানের দাপুটে জয়ে সরাসরি ফাইনাল নিশ্চিত করে ডায়নামাইটস।
এলিমিনেটর ম্যাচে গেইলের অপরাজিত ঝড়ো সেঞ্চুরিতে খুলনা টাইটান্সকে বিদায় করে রংপুর। দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হওয়ার মিশনে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জ্বলে ওঠেন অপরাজিত সেঞ্চুরিয়ান চার্লস ও ম্যাককালাম (৪৬ বলে ৭৮)। ১৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৬ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় ২০১৫ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
বিপিএলের আগের চারটি শিরোপাই মাশরাফি ও সাকিবের দখলে। প্রথমবার তারা ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি। একজন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। আরেকজন টি-টোয়েন্টির পর টেস্টের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন।
সাকিরের সামনে ব্যাক-টু-ব্যাক শিরোপা জয়ের হাতছানি! অধিনায়ক হিসেবে চারবার ট্রফির জয়ের স্বাদ নিতে মুখিয়ে আছেন মাশরাফি। সাকিবের এটি তৃতীয় ফাইনাল (তিনবারই ঢাকার হয়ে, প্রথম ও তৃতীয় আসরে ছিলেন অন্য টিমে)। দ্বিতীয় এডিশনে মাশরাফির অধীনে খেলেছিলেন।
প্রথম দুই আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে শিরোপা জিতিয়েছেন মাশরাফি। তৃতীয়বার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে যোগ দিয়ে বাজিমাত করেন। এবার ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’র হাত ধরে রংপুর রাইডার্স বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন হবে নাকি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তকমাটা ঢাকার গায়েই থাকবে সেটিই এখন দেখার বিষয়!
উইনিং কম্বিনেশন ধরে রেখে রংপুর একাদশ অপরিবর্তিত। একটি পরিবর্তন এনেছে ঢাকা। পেসার মোহাম্মদ সাদ্দামের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন খালেদ আহমেদ।
রংপুর একাদশ: ক্রিস গেইল, জনসন চার্লস, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, মোহাম্মদ মিথুন (উইকেটরক্ষক), রবি বোপারা, নাহিদুল ইসলাম, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সোহাগ গাজী, ইসুরু উদানা, নাজমুল ইসলাম, রুবেল হোসেন।
ঢাকা একাদশ: মেহেদী মারুফ, এভিন লুইস, জো ডেনলি, কাইরন পোলার্ড, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), শহীদ আফ্রিদি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সুনীল নারাইন, জহুরুল ইসলাম (উইকেটরক্ষক), আবু হায়দার রনি, খালেদ আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭
এমআরএম