ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কেন পারছে না বাংলাদেশ?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৮ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৮
কেন পারছে না বাংলাদেশ? ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

বলা হচ্ছে, ছন্দ ফিরে পেতে একটি জয় দরকার। সেই জয়টি যে অধরা হয়েই থাকছে। বারেবারে হতাশার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে টিম বাংলাদেশ। কেন পারছে না টাইগাররা? ম্যাচের পর ম্যাচ জয়ের লক্ষ্যে নেমে দিন শেষে সঙ্গী হতাশা!

হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে মনোবল চাঙা করতে জয়ের বিকল্প নেই। সেটি যত দ্রুত হবে ততই মঙ্গল।

কিন্তু ম্যাচ জেতার মতো করে তো আগে খেলতে হবে। খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায় তা অনুপস্থিত।

টানা তিনটি হোম সিরিজ (ত্রিদেশীয় ওয়ানডে ফাইনাল, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি) হারের বড় ধাক্কা নিয়ে শ্রীলঙ্কার মাটিতে চলমান ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের শুরুতেও একই চিত্র। কোহলি-ধোনি-হার্দিক পাণ্ডে-বুমরাহ-ভুবনেশ্বরবিহীন ভারতের বিপক্ষেও এক প্রকার আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। ব্যাটে-বলে ব্যর্থতা যাকে বলে।

বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে একেক করে ফিরেছেন সাজঘরে। সাকিব আল হাসানের না থাকাটাও বেশ ভোগাচ্ছে। গত জানুয়ারির শেষদিকে লঙ্কানদের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় ওয়ানডের ফাইনালে আঙুলে চোট পাওয়ার পর থেকে খেলার বাইরে সাকিব।

দলের নেতৃত্ব নিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও আছেন ভীর্ষণ চাপে। টানা হারের মধ্যে থাকলে যা হয়। নিজেদের সবশেষ ১৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ১৩টিতেই হেরে গেছে বাংলাদেশ।

দলে ঘাটতিটা কিসের? তামিম, সৌম্য, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বিরের মতো পরীক্ষিত সব ব্যাটসম্যান। বোলিংয়ে মোস্তাফিজের সঙ্গে পেস বোলিংয়ে রুবেল, তাসকিন। অভিজ্ঞদের সঙ্গে তরুণদের সংমিশ্রণে পরিণত এক দল বাংলাদেশ। সাকিবের অনুপস্থিতি ভালো প্রভাব ফেলেছে এটা মানতে হবে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অভাব পূরণ করা কঠিন। একজন ব্যাটসম্যান ও একজন বোলার নিতে হয় একাদশে। স্পিন অ্যাটাকে সাকিবের জায়গায় মিরাজ, নবাগত নাজমুল ইসলাম অপু খেলছেন।

সবই যখন আছে তাহলে বলতে হবে দলের মধ্যে পরিকল্পনার অভাব। ম্যাচ জিততে হলে এটি সবার আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। টি-২০ হলে তো কথাই নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সবাই যার যার দায়িত্ব পালন না করলে ম্যাচ জেতার কাছাকাছি যাওয়াটা দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু না। বলা চলে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বাংলাদেশের। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।

ব্যাটি-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে সবাই সেরাটা উজাড় করে দিক বাকিটা এমনিতেই হয়ে যাবে। প্রথম বল থেকে শেষ পর্যন্ত পারফরম্যান্স নিঁখুত হলে ছন্দ উড়ে এসে ধরা দেবে।

সীমিত ওভারে বাংলাদেশের বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে ‘ডল বল’। ওয়ানডেতে না হয় সেটি পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে। টি-টোয়েন্টিতে ডেকে আনে বিপদ। কলম্বোতে যেটি হলো। ভারতের বিপক্ষে (৮ মার্চ) ৫৫টি বল ডট খেলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

এটিও হারের অন্যতম কারণ। স্কোরবোর্ডে ৮ উইকেটে মাত্র ১৩৯ রান তুলতে পেরেছে মাহমুদউল্লাহর দল। বাংলাদেশের ইনিংস শেষে ভারত কত বল হাতে রেখে জিতবে সেটিই অপেক্ষমান ছিল! ৬ উইকেট ও ৮ বল হাতে রেখে জিতেছে রোহিত শর্মার টিম। ১৯তম ওভারে ম্যাচ শেষ হয়েছে বলে এটা ভাবার কারণ নেই যে বাংলাদেশ লড়াই করে হেরেছে। একেবারেই ফেরে ওঠেনি।

যাই হোক, আশার তো কোনো শেষ নেই। সময়টা খারাপ গেলেও বাংলাদেশকে নিয়েও নতুন আশায় বুক বাঁধেন সমর্থকরা। সবাই তাকিয়ে এখন শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিকে। উদ্বোধনী খেলায় ভারতকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে ছন্দে স্বাগতিক শিবির।

শনিবার (৯ মার্চ) কলম্বোতে সিরিজে তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। হতাশা ঝেড়ে ভুল শুধরে নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো তো টিম বাংলাদেশ? নিজেদের জন্যই যে একটি জয় বড্ড দরকার লাল-সবুজের জার্সিধারীদের। ছন্দ ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে সাফল্য ধরা দেবে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়! অপেক্ষাটা আর দীর্ঘায়িত না হোক সেই কামনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, ৯ মার্চ, ২০১৮
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।