ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মুশফিকের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের ২৬১ রান

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
মুশফিকের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের ২৬১ রান ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ করে আউট হন মুশফিক-ছবি: সংগৃহীত

ধ্বংসস্তুপের মাঝে একাই ‍বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন মুশফিকুর রহিম। চাপের মধ্যে থেকেও কি দুর্দান্ত ব্যাটিংটাই না করলেন তিনি। তার অন্যবদ্য সেঞ্চুরিতেই এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৬১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

এদিন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ করে আউট হন মুশফিক। ২০১৪ সালে ফতুল্লায় ভারতের বিপক্ষে ১১৭ রানের ইনিংসটি ছিল তার আগের ওয়ানডে সেরা।

এর আগে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরে উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। যেখানে লঙ্কানদের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মাঠে নামে দু’দল।

শুরুটা বেশ বাজে হয় বাংলাদেশের। প্রথম ওভারের দুটি উইকেট হারায় দলটি। লাসিথ মালিঙ্গার পঞ্চম বলে স্লিপে থাকা কুশাল মেন্ডিসের ক্যাচে শূন্য রানে ফেরেন থাকা লিটন দাশ। পরের বলে উইকেটে আসা সাকিব আল হাসানকে একেবারে বোল্ড করে দেন এই অভিজ্ঞ লঙ্কান পেসার।

সুরাঙ্গা লাকমালের করা দলীয় দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বাঁহাতের কবজিতে আঘাত পান তামিম ইকবাল। এমনিতেই ডানহাতের অনামিকায় তার পুরোনো চোট রয়েছে। পরে সে সময়ই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন এই ওপেনার।

দলীয় ২০তম ওভারে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মোহাম্মদ মিঠুন। ৫২ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ফিফটি করেন তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেছিলেন।  

শেষ পর্যন্ত ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান মালিঙ্গার তৃতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন। ২৬তম ওভারের তৃতীয় বলে তুলে মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক পেরেরার তালুবন্দি হন তিনি। ৬৮ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৩ করেছিলেন মিঠুন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১৩১ রান করেছিলেন তিনি।

২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে লঙ্কান স্পিনার আমিলা আপোনসোর শিকার হয়ে ফেরেন নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ। ব্যক্তিগত এক ‍রানে তিনি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ক্যাচে পরিণত হন। পরের ওভারের শেষ বলে মালিঙ্গা নিজের চতুর্থ উইকেট উদযাপন করে মোসাদ্দেক হোসেনকে দিয়ে। এক রান করা মোসাদ্দেক উইকেটের পেছনে থাকা পেররাকে ক্যাচ দেন।

মুশফিকের সঙ্গে ভালো ব্যাটিং করতে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৪তম ওভারে ফিরে যান। ১৫ রান করা এই অলরাউন্ডার সুরাঙ্গা লাকমালের কট এন্ড বোল্ডের শিকার হন।

১৮ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। ৩৯ ওভারের শেষ বলে ডি সিলভা আউট করেন তাকে। পরে ডি সিলভার শিকারে ২ রান করে ফেরেন রুবেল হোসেন।

৪১তম ওভারে দলীয় দুশো রানের গণ্ডি পার করে বাংলাদেশ। পরে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিকুর রহিম। ১৮৮ ম্যাচ ও ১৭৩ ইনিংসে এই কীর্তি গড়েন তিনি। ১২৩ বলে ৭টি চার ও এক ছক্কায় সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মুশফিক।

৪৭তম ওভারে ১০ রান করা মোস্তাফিজুর রহমান রান আউটের শিকার হন। তবে মোস্তাফিজের বিদায়ে বাংলাদেশ যখন নমব উইকেট হারায়, ঠিক তখনই সবাইকে চমক দেখিয়ে মাঠে নামেন এশিয়া কাপ থেকে ইতোমধ্যে ছিটকে পড়া ওপেনার তামিম। ইনিংসের শুরুতে চোট পাওয়া এই তারকা নাকি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন। পরে চোট পাওয়া হাত নিয়েই মাঠে নেমে এক হাতে একটি বল মোকাবেলা করেন।

তামিম মাঠে আসার পর নিজের সংগ্রহে আর কোনো রান (২) যোগ করতে না পারলেও, ঝড় তুলতে শুরু করেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৫০ বলে ১১টি চার ও ৪টি বিশাল ছক্কায় ১৪৪ করে থিসারা পেরার বলে বিদায় নেন। ৪৯.৩ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়।

শ্রীলঙ্কান বোলারদের মধ্যে মালিঙ্গা এক বছরের বেশি সময় পর মাঠে নেমেই ৪টি উইকেট তুলে নেন। এদিন আবার স্বদেশি মুত্তিয়া মুরালিধরনকে পেছনে ফেলে এশিয়া কাপের শীর্ষ উইকেট শিকারি হন তিনি (৩২)। ডি সিলভা দুটি উইকেট তুলে নেন।

গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ছাড়াও আফগানিস্তানের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ। যেখানে গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচ জিতেও দ্বিতীয় পর্বের সুযোগ থাকছে। দুটি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি দল দ্বিতীয় পর্বে খেলবে। তবে এ ম্যাচে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি।

৬ দলের অংশগ্রহনে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান খেলবে ‘এ’ গ্রুপে। অন্য গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও হংকং।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষ), মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: উপুল থারাঙ্গা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কুশাল পেরেরা (উইকেটরক্ষক), কুশাল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (অধিনায়ক), থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, লাসিথ মালিঙ্গা, সুরাঙ্গা লাকমাল, আমিলা আপোনসো,দিলরুয়ান পেরেরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।