ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দুশ্চিন্তার নাম বাজে আম্পায়ারিং

মহিবুর রহমান, স্পেশাল করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
দুশ্চিন্তার নাম বাজে আম্পায়ারিং ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে রুবেলের বলে রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরও ফিল্ড আম্পায়ার ইয়ান গোল্ডের সেই কুখ্যাত নো বল ডাকার মুহূর্ত-ছবি: সংগৃহিত

ঢাকা: এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফাইনাল ম্যাচটির আগে একটি দুশ্চিন্তা কিন্তু থাকছেই। সেটা অন্য কিছু নয়, বাজে আম্পায়ারিং। কেননা ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই কলঙ্কিত আম্পায়ারিংয়ে লাল- সবুজের দলের স্বপ্নযাত্রার সমাপ্তি ঘটেছিলো।

বলার অপেক্ষা রাখে না মাঠের লড়াইয়ে ভারত জিতে গেলে তাতে কারোরই বিন্দুমাত্র কষ্ট থাকবে না। কিন্তু লড়াইটা যদি মাশরাফিদের সঙ্গে আম্পায়ারদেরও হয়! তাহলে সেটা হবে নিদারুণ বেদনার।

কী হয়েছিলো ওই ম্যাচে? অনেকেই হয়তো জানেন তারপরেও মনে করিয়ে দিচ্ছি। ১৯ মার্চের ওই ম্যাচের ৪০তম ওভারে রুবেল হোসেনের চতুর্থ বলে ভারতের ব্যাটিং স্তম্ভ রোহিত শর্মা ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিলে তা তালুবন্দি করেন ইমরুল কায়েস। রোহিতের ব্যক্তিগত রান তখন ৯০। কিন্তু ফিল্ড আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ফুলটস বলটি নো ডেকে দিলেন! থার্ড আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তিনি ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।

রুবেলের বলে রোহিত ইমরুলের ক্যাচে পরিণত হওয়ার পর আম্পায়ার নো বল ডেকে বসেন-ছবি: সংগৃহীতএটি ছিলো ওই ম্যাচের কলঙ্কিত আম্পায়ারিংয়ের দ্বিতীয় ঘটনা। প্রথমটি ঘটেছিল ৩৪তম ওভারে। সুরেশ রায়নার বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের আবেদন করেছিলেন মাশরাফি। আশ্চর্যজনকভাবে সেই আউটটিও দেননি আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড। আশ্চর্যজনক কেন? রিপ্লেতে দেখা গিয়েছিলো বল পিচআপ করে মিডল স্ট্যাম্পের ওপরেই ছিলো।

সন্দেহের বাষ্প উড়েছিল ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি হাঁকানো টাইগার ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউট নিয়েও। আম্পায়ারদের এমন অমার্জনীয় ভুলের প্রতিবাদে  সেদিন গ্যালারির সমর্থকেরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

ভারতের এই দুই ব্যাটসম্যান এবং রিয়াদের আউটের আবেদনে আম্পায়ার ও থার্ড আম্পায়ার যদি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দিতেন তাহলে সন্দেহাতীতভাবেই ওই ম্যাচের ফলাফল বাংলাদেশের পক্ষেই আসতো একথা বলাই বাহুল্য। হয়তো দলটি ক্রিকেটের তিন মোড়লের একটি বলেই আম্পায়রা সাহস করেননি কিংবা তাদের অনুকম্পা লাভের আশায় সিদ্ধান্তের পাল্লা তাদের দিকে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

আম্পায়ারদের অমার্জনীয় ভুলের প্রতিবাদে সেদিন গ্যালারির সমর্থকেরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ আখ্যা দেন-ছবি: সংগৃহীতসেই ভারতই কিন্তু চলতি এশিয়া কাপের ফাইনালে টাইগারদের মুখোমুখি। আবারও কী তাহলে সেই প্রশ্নবিদ্ধ আম্পায়ারিংয়ের পুনরাবৃত্তি দেখা যাবে? না। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আম্পায়ার নাদির শাহ সেই সম্ভাবনা দেখছেন না।

‘আশা করছি বাজে আম্পায়ারিং হবে না। সবসময় ওইগুলি হয় না। ২০১৫ সালে হয়েছে এখন ২০১৮ সাল। মানুষ এখন অনেক সচেতন। বাংলাদেশিরা সব জায়গায়ই আছে। কখনও কখনও ভুল হয়ে যায়। ওইটা চাপে হয়ে গেছে। এবার হবে না। আম্পায়ারিংয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ’

উদারহরণটি দিলেন চলতি এশিয়া কাপে সুপার ফোরে ভারত-আফগানিস্তান দ্বৈরথ দিয়ে। ম্যাচের ৪০ ওভারে আফগান অফস্পিনার মোহাম্মদ নবী তার চতুর্থ ডেলিভারিটি দিনেশ কার্তিকের পায়ে লাগিয়ে আবেদন করতেই আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দেন।

‘সেদিন দেখলেন না আফগানিস্তানের সাথে ম্যাচে কার্তিককে ডাউন দ্য লেগে কী আউটটা দিল?’

তবে আম্পায়ারিং যত ভালোই হোক না কেন তামিম, সাকিবহীন বাংলাদেশকে ভারত বধে মাঠের খেলায় ১১০ ভাগ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে রাখলেন লাল-সবুজের এই অভিজ্ঞ এই আম্পায়ার। টপ অর্ডারকেও দিলেন সতর্ক শুরুর বার্তা।

‘ভারতের সঙ্গে জিততে হলে বাংলাদেশকে ১১০ ভাগ দিয়ে খেলতে হবে। তাহলেই হবে। রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানকে আউট করতে পারলেই ভালো সুযোগ তৈরী হবে। টস জিতে বা হেরে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামলে অবশ্যই ২৫০-২৬০ রান করতে হবে। খুব ভালো খেলতে হবে। তামিম-সাকিব নাই, অনেক বড় সেটব্যাক। এজন্যই ১১০ ভাগ দিতে হবে এবং টপ অর্ডারকেও ভাল খেলতে হবে। ’
 
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
এইচএল/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।