সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ-৫০৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ-১১১ ও ২১৩বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৫০৮ রানের জবাবে মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ইনিংসে ১১১ রানেই প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৯৭ রানে পিছিয়ে ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ফের মিরাজ আঘাতে ২১৩ রানে সবকটি উইকেট হারায় তারা।
এর আগে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো দলকে ফলোঅনে ফেলে টাইগাররা। এই ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে নিজেকেই ছাপিয়ে যান মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে পান আরও ৫ উইকেট। সর্বশেষ জোমেল ওয়ারিকানকে নিজের ক্যাচেই মাঠ ছাড়া করান। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২টি উইকেট নিলেও রান দিয়েছিলেন ১৫৯। এবার দিয়েছেন মাত্র ১১৭ রান। মিরপুর টেস্টে ১২ উইকেট নিয়ে মিরাজ নাম লেখান সাকিব আল হাসানের পাশে। ম্যাচে দুইবার ১০ উইকেট শিকার করা একমাত্র বাংলাদেশি বোলার ছিলেন এ বাঁহাতি স্পিনার। অধিনায়কের কীর্তিতে ভাগ বসান খুলনার এই তরুণ।
ম্যাচে একবার করে ১০ উইকেট শিকার করা অন্য দুই বোলার এনামুল হক জুনিয়র ও তাইজুল ইসলাম।
ধ্বংসস্তূপের মাঝে ক্যারিবীয়দের হয়ে দারুণ ইনিংস খেলা শিমরন হেটমায়ারকে ফেরান মিরাজ। ৯২ বলে তার ৯৩ রানের ইনিংসটিতে ৯টি ছক্কার বিপরীতে ছিল মাত্র একটি চার। এছাড়া দেবেন্দ্র বিশু বিদায় করেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে শাহি হোপ ও শিমরন হেটমায়ার ৫৬ রান তুললেও, তাদের জুটি ভেঙে দেন মিরাজ। ব্যক্তিগত ২৫ রানে হোপকে সাকিবের ক্যাচে ফেরান।
মাঝে ক্যারিবীয়দের ষষ্ঠ উইকেটটি তুলে নেন নাঈম হাসান। এই টেস্টে এটিই তার প্রথম উইকেট। শেন ডওরিচকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত করেন চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেকে তরুণ হিসেবে পাঁচ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়া এই তারকা।
ইনিংসের শুরুতেই দুই ওপেনারকে ছেঁটে ফেলেন সাকিব ও মিরাজ। পরে এই টেস্টে নিজের প্রথম এবং দ্বিতীয় ও ক্যারিবীয় দ্বিতীয় ইনিংসের তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট লাভ করেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুল ক্যারিবীয় ইনিংসের শেষ উইকেট লুইসকেও ফেরান। এর আগে তৃতীয় উইকেটে নামা সুনীল অ্যামব্রিসকে এলবিতে মাঠ ছাড়া করান তাইজুল। অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে এলবির ফাঁদে ফেলেন সাকিব। আর কাইরন পাওয়েল মিরাজের বল এগিয়ে মারতে গেলে মুশফিকের কাছে স্ট্যাম্পিং হন। পরে রোস্টন চেজকে মুমিনুল হকে ক্যাচে বিদায় করেন এই বাঁহাতি।
এর আগে মিরপুর টেস্টে দুর্দান্ত দু’দিন পার করার পর তৃতীয় দিন ফিল্ডিংয় নেমেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দেয় বাংলাদেশ। যেখানে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ইনিংসে ক্যারিবীয়দের ৭ উইকেট দখল করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৬ ওভারে মাত্র ৫৮ রানে ৭ উইকেট পেলেন তিনি। তার আগের ইনিংস সেরা ছিল ৭৭ রানে ৬ উইকেট।
৩৯ রান করা শিমরন হেটমায়ারকে নিজের ক্যাচেই বিদায় করে শুরু করেন মিরাজ। পরে দেবেন্দ্র বিশু ও কেমার রোচকেও দ্রুত মাঠ ছাড়া করান। ডরউইচকে এলবির ফাঁদে ফেলে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের নজির গড়েন। ক্যারিবীয়দের ইনিংসের ইতি টানেন অধিনায়ক সাকিব। লুইসকে এলবি ফাঁদে ফেলেন তিনি। মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরিতে (১৩৬) সব উইকেট হারিয়ে ৫০৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায়।
এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে ৬৪ রানে জিতে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
ম্যাচ সেরা হন মিরাজ। আর সিরিজ সেরার পুরস্কার ওঠে সাকিবের হাতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮
এমএমএস