আজকের ম্যাচটা অনেক কারণেই টাইগারদের জন্য বিশেষ। ম্যাচের গল্পটা অন্যরকমও হতে পারতো।
টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৫ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। ফিফটির দেখা পেয়েছেন তামিম, মুশফিক ও সাকিব। কিন্তু বিধ্বংসী ওপেনার শাই হোপ একাই বাংলাদেশের বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে ২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন উইন্ডিজকে। ১৪৪ বল খেলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১৪৬ রানে অপরাজিত থেকেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন হোপ। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২৫৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার চন্দরপল হেমরাজের (৩) উইকেট হারায় উইন্ডিজ। এরপর ড্যারেন ব্র্যাভোকে সঙ্গে নিয়ে ৬৫ রানের জুটি গড়েন শাই হোপ। ব্র্যাভোকে (২৭) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন রুবেল হোসেন। এরপর মারলন স্যামুয়েলসকেও আউট করেন রুবেল। তবে আউট হওয়ার আগে হোপের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন স্যামুয়েলস (২৬)।
এরপর ১৩২ থেকে ১৫৭ রানে পৌঁছুতেই আরও ২ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। কিন্তু ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখনও উইন্ডিজের হাতেই। কারণ একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন এই ওপেনার। তুলে নেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। কিন্তু সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আরও বেশি সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন তিনি। যদিও মাঝে একবার ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম অপু তা ধরে রাখতে পারেননি। পারেনি বাংলাদেশও। শেষদিকে হেতমায়ার, রোভম্যান পাওয়েল ও রোস্টন চেজের উইকেট তুলে নিলেও মূল বিপদ হয়ে ক্রিজে থাকা হোপকে কেউই আউট করতে পারেননি। শেষে কিমো পলকে (১৮) নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি।
শেষদিকে ২ ওভারে উইন্ডিজের দরকার ছিল ২২ রান। কিন্তু ৪৯তম ওভারে বল করতে এসে ৩ চার, ২, ১ আর ওয়াইড মিলিয়ে সেই ওভারে ১৬ রান তুলে নেন হোপ-পল। শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান দরকার ছিল উইন্ডিজের। অধিনায়ক মাশরাফি বল তুলে দেন ম্যাচে এক ওভারও বল না করা মাহমুদউল্লাহ’র হাতে। কিন্তু মাত্র ৬ রান তুলতে ৪ বলের বেশি লাগেনি হোপ-পলের। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা হোপ ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট করে পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন। ১টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন মাশরাফি ও মিরাজ।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৪ রানেই ইমরুল কায়েসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওশানে থমাসের বলে শাই হোপের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানেই বিদায় নেওয়া ইমরুলের বিদায়ের আগেই ওপেনার লিটন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। পরে সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর নামলেও ৮ রান করেই বিদায় নিয়েছেন তিনি।
এরপর তামিম ও মুশফিক মিলে শতরানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। ঠিক ৫০ করেই তামিম বিদায় নিলে কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন মুশফিকও (৬২)। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব ৬১ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান। কিন্তু দলীয় ১৯৩ রানে মাহমুদউল্লাহ (৩০) বিদায় নেন। সাকিব নিজের ফিফটি তুলে নিয়ে দ্রুত রান করার চেষ্টা করে কেমার রোচের বলে বোল্ড হন। শেষ দিকে বাকিরা সেভাবে রান তুলতে না পারায় ২৫৫ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
উইন্ডিজের হয়ে ৩ উইকেট পেয়েছেন ওশানে থমাস।
এই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চলতি ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিলেটে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী ম্যাচটি এখন সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হতে চলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
এমএইচএম