ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

সিলেটেও বিবর্ণ বিপিএল, গ্যালারিতে দর্শকখরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
সিলেটেও বিবর্ণ বিপিএল, গ্যালারিতে দর্শকখরা সিলেট পর্বেও স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকখরা-ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: পৌষ সংক্রান্তি লগ্নে বাড়তি আমোদ জোগাবে বিপিএল। সিলেটের মানুষের এমন চিন্তাধারায় গুড়েবালি হলো মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সিলেট পর্বের শুরুর দিনেই। ঢাকা পর্বের শেষের দিকে ছাড়া বাকি সময়েও একই দৃশ্য দেখা গেছে।

সিলেটে ক্রিকেট মানেই দর্শক উন্মাদনা। মাঠে যে দলই থাকুক গ্যালারি ভর্তি দর্শক এই স্টেডিয়ামের নিয়মিত চেহারা।

টি-টোয়েন্টি, একদিনের ম্যাচ কিংবা টেস্ট ম্যাচেও সিলেটের গ্যালারিতে উন্মাদনা ছিল অবাক করার মতো।

সেই সিলেটের মাঠে এবার অস্বাভাবিক দর্শকখরা। এক অর্থে গ্যালারি শূন্য বলা চলে। আর দর্শকখরার অন্যতম কারণ টিকিটের নিয়ন্ত্রণ।

ক্রীড়ামোদিরা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে এবার বিপিএল সিলেট পর্বে টিকিট বগলদাবা করে রাখার অভিযোগ ওঠেছে।
 
বিপিএলের সিলেট পর্বে খেলা দেখতে না পারায় প্রচণ্ড হতাশ দর্শকরা। খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত ক্রীড়ামোদিদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেদের হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন।  
 
তাদের মতে, এবার বিপিএলের টিকিট দালালরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। ‘মিরপুরের ভুতুড়ে ছায়া সিলেটে পড়েছে’-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে  এমন মন্তব্যের সঙ্গে  নিজের কমেন্ট জুড়ে দিয়ে ফেসবুক ব্যবহারকারী নাজমুল ইসলাম রাহাত লিখেছেন-'ভুতুড়ে ছায়া থাকবে না কেন? টিকেট দালালরাতো এর জন্য মূল দায়ী। '
 
ভিপি কৃষ্ণ সুনীল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন- ‘২০০ টাকার টিকিট ৬০০ টাকা, যাবে কে?’। এম সাইফুর রহমানের মন্তব্য, ‘দালালদের বিরুদ্ধে লিখেন। ’

অভিযোগ রয়েছে, সিলেট পর্বে এবার সবচেয়ে বেশি টিকিট বগলদাবা করা হয়েছে। আর নিজের মাঠে খেলা সিলেট সিক্সার্স ম্যাচের টিকিটতো আগেই উধাও।

রাসেল মিয়া নামের এক তরুণের অভিযোগ, এবার বিপিএল দেখব না, সব টিকিট 'দালাল'দের হাতে।
 
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা চলাকালে প্রেসবক্সে উপস্থিত অনেক সাংবাদিকরাও মন্তব্য করেন- সিলেটের মাঠে দর্শকখরার এমন অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। বাইরে মানুষের ভীড় থাকলেও টিকিট নিয়ন্ত্রণের কারণে দর্শকরা খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও মন্তব্য তাদের অনেকের।  
 
অবশ্য সিলেট সিক্সার্স কমিটির সদস্য সিসিক কাউন্সিলর এ কে এ লায়েক আহমদ বলেন, গতবার ফাঞ্চাইজির উদ্যোগে ২শ' টিকিট কিনে বিলি করা হয়েছে। কিন্তু এবার টিকিট বগলদাবা করে রাখা হয়নি বরং প্রচারণার অভাব রয়েছে। গতবারের খেলার আগে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞাপনসহ আগে থেকেই প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এছাড়া শুরু থেকে খেলায় হারের কারণেও লোকজন সিলেটের মাঠে বিমুখ হয়েছে মনে করছেন তিনি।
 
তবে শেষ বেলায় কিছু দর্শক মাঠে ঢুকেছেন দাবি করে লায়েক আহমদ বলেন, বিগত দিনেও আমরা দেখেছি, ম্যাচের শেষ ভাগেও দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করেছেন। এবারো তাই হচ্ছে।  
 
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঘরের মাঠে সিলেট সিক্সার্সের খেলা দেখতে গ্যালারিতে দর্শক সমাগম হলেও মাত্র ৭ ওভার পরেই সেই আগের দৃশ্য দেখা গেল। স্বাগতিক দল যে এরইমধ্যে মাত্র ২২ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছে। কোথায় ওয়ার্নারদের ব্যাটে চার-ছয়ের ফুলঝুরি দেখা যাবে, উল্টো ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া দেখতে হলো। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬৮ রানেই গুটিয়ে গেছে সিলেট। তবে সান্ত্বনা ঘরে ছেলে অলক কাপালি এদিন ৩১ বল খেলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় মান বাঁচানো এক ইনিংস খেলেছেন।
 
এর আগে, দর্শকখরার এমন দিনে চার ম্যাচ পর অধরা জয়ের দেখা পেয়েছে খুলনা টাইটান্স। রাজশাহী কিংসকে ২৫ রানে হারিয়ে আসরে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহর দল।
 
প্রায় ১৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার গ্যালারিতে হাজারখানেক দর্শকের সামনে নিরুত্তাপ ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রান তুলে খুলনা। স্বল্পরানের এ স্কোর টপকাতে একটু দেখেশুনে উইকেটে পড়ে থাকলেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলতে পারতো রাজশাহী কিংস। কিন্তু ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ার মিছিলে খেই হারিয়ে বসে মেহেদি হাসান মিরাজের দল, গুটিয়ে যায় মাত্র ১০৩ রানে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
এনইউ/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।