এক বিবৃতিতে আইসিসি’র মুখপাত্র ক্লেয়ার ফার্লং বলেন, “সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেনাদের পরিবারের আর্থিক সহায়তার উদ্দেশ্যে ওই ক্যাপ পরার অনুমতি চেয়েছিল বিসিসিআই। আর আইসিসি’র পক্ষ থেকে তাদের সেই অনুমতি দেওয়াও হয়েছিল।
‘আর্মি ক্যাপ’ পরার পরিকল্পনা সবার আগে সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও বর্তমানে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মাহেন্দ্র সিং ধোনির মাথায় আসে। পরে দলের বাকি সবাই তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ধোনিকে সম্মানসূচক ‘লেফটেন্যান্ট কর্নেল’ পদ দিয়েছে।
নিজেদের ম্যাচ ফি নিহতদের পরিবারের কল্যাণে দান করাসহ জাতীয় প্রতিরোধ ফান্ডের জন্য অনুদান দিতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করা ছিল ‘আর্মি ক্যাপ’ পরার অন্যতম উদ্দেশ্য। এই ফান্ডের মাধ্যমে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের সন্তানদের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের এমন উদ্যোগ পুরো ভারত এমনকি সারা বিশ্বেই প্রশংসা কুঁড়ায়।
কিন্তু এই নিয়েই ক্ষেপেছে পাকিস্তান। আইসিসি’র কাছে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পিসিবি। ভারতের বিপক্ষে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করেছে তারা। পিসিবি’র চেয়ারম্যান এহসান মানি রোববার (১০ মার্চ) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের আর কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই, তাই আমরা আইসিসি’র কাছে আমাদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরেছি। ’
মানি বলেন, পাকিস্তানের অবস্থান খুবই পরিস্কার যে, ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো যাবে না। তার মতে, ভারতীয় ক্রিকেটাররা যে উদ্দেশ্যে আইসিসি’র অনুমতি নিয়েছিল তা বাস্তবায়ন না করে বরং ব্যবহার করেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তারা আইসিসি’র কাছ থেকে এক কাজের জন্য অনুমতি নিয়ে ভিন্ন কাজ করেছে, যা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ’
২০১৪ সালে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে ‘সেভ গাজা’ এবং ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা রিস্টব্যান্ড পরে মাঠে নেমেছিলেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার মঈন আলী। এই ঘটনার পর মঈনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল আইসিসি। কোহলিদের বিরুদ্ধেও তেমন কোনো শাস্তির দাবি জানিয়েছিল পিসিবি।
গত মাসে, পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে পাকিস্তানকে ‘বয়কট’ করার আহবান জানিয়েছিল বিসিসিআই। কিন্তু আইসিসি’র সভায় তাদের সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। এমনকি বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানকে বাদ দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ভারতের তরফ থেকে। সেই প্রসঙ্গ ধরেই মানি এবার ফিরতি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন।
এর আগে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী একই কারণ দেখিয়ে আইসিসি ও পিসিবি’র প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
এমএইচএম