অনেকে ভেবেছিলেন তামিমের সঙ্গী হিসেবে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসকে বেছে নেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্বকাপের ক্যাম্পে অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন তামিম ইকবাল। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তামিম ইকবালের একজন যোগ্য ওপেনিং সঙ্গী পাওয়া যায়নি। এটা তার নিজের জন্যও চিন্তার বিষয়। এতে তার খেলায় প্রভাব পড়ে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, ‘পার্টিকুলার ম্যাচে তো এমন কোনো সমস্যা করে না। কিন্তু যখনই আপনার একজন নিয়মিত ওপেনিং সঙ্গী থাকবে, তখন যেটা হয়, আমরা দু’জনই আমাদের খেলাটাকে ভালো বুঝতে পারি আর কি। '
‘অনেক সময় হয়তোবা এমন থাকে যে, আমার টাইমিং ভালো হচ্ছে না। হয়তো আমি মারছি, কিন্তু ফিল্ডারের কাছে চলে যাচ্ছে। তখন তাকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। একইভাবে ওর সাথে যদি এই জিনিসটা হয়, তবে আমার চান্স নিতে হয়। বাট, ইফ সামবডি ইজ নট সেটলড, ইটস ভেরি আনফেয়ার টু গো এন্ড টেল হিম-ভাই, তুমি চান্স নাও। কারণ, ওদেরও একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবে আমি নিশ্চিত, লিটন অ্যান্ড সৌম্য যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছে। আ’ম শিওর দিস ইজ দ্য রাইট টাইম টু শো দ্য ওয়ার্ল্ড হাউ গুড দে আর,’-যোগ করেন তামিম।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশের প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ফরম্যাটে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সৌম্য। রকিবুল হাসানকে পেছনে ফেলে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৪৯ বলে ২০০ রান করেছেন সৌম্য। সৌম্য শেষ পর্যন্ত ১৫৩ বলে ১৪টি চার ও ১৬ ছক্কায় ২০৮ রানে অপরাজিত থাকেন। এদিন সৌম্যর ১৬ ছক্কাও বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ওভার বাউন্ডারির রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ১১ ছক্কার।
সৌম্যের এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খুশি তামিম। বিশ্বকাপের নিজের সম্ভাব্য ওপেনিং সঙ্গীকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা দারুণ অর্জন। বাংলাদেশি কেউ এই প্রথম ২০০ রান করেছে। যদিও আমরা খেলবো একেবারেই ভিন্ন একটা কন্ডিশনে, ভিন্ন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে, তবুও রান করাটা সবসময়ই ইতিবাচক। এটা আত্মবিশ্বাস যোগায়। সে কোথায় রান করেছে এটা মুখ্য বিষয় নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে সে রান করেছে। '
‘ও যদি শেষ দুই ম্যাচে দুইটা সেঞ্চুরি না করে ১০ আর ৫ করে ট্যুরে যেতো, ওর মাথার মধ্যে এক পার্সেন্ট হলেও একটা চাপ থাকতো। কিন্তু এখন সে জানে সে রান পেয়েছে। যখন আপনি রান করেন, তখন আপনি এটা জানেন যে কিভাবে রান করতে হয়। যখন কারো ফর্ম খারাপ যায়, তখন সে ওইটা ভুলে যায় যে কিভাবে রান করতে হবে। তাই এটা তার জন্য খুব পজিটিভ যে সে আয়ারল্যান্ডে যাবার আগে দুটো বড় ইনিংস খেলেছে। '
ব্যাটিংয়ের সময় অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যানের সঙ্গে বোঝাপড়াটা গুরুত্বপূর্ণ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, ‘অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একজন কলিগের সাথে ২০ বছর ধরে কাজ করেন, তাহলে সে আপনার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারগুলো জানবে- এটা সব পেশাতেই গুরুত্বপূর্ণ। যারা বিশ্বের গ্রেট ওপেনিং পার্টনার, হেইডেন-গিলক্রিস্ট, গাঙ্গুলী-শচীন, শেবাগ-শচীন, এদের মধ্যে দেখবেন একটা বোঝাপড়া থাকতো। যখন আপনি তাদের খেলা দেখবেন তখন দেখবেন তারা উইকেটে গিয়ে মজা করছে। এবং তারা জানে তাদের পার্টনার কি চাচ্ছে। এরকম সুযোগ দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এখনও হয় নাই। '
‘কিন্ত আমি নিশ্চিত, যে দুজন বিশ্বকাপে যাচ্ছে (লিটন ও সৌম্য), তারা বাংলাদেশের হয়ে আগামী ১০-১৫ বছর খেলার সামর্থ্য রাখে। ভালো একটা পারফরম্যান্স দেখানোর এটাই সেরা সময় বলে আমি মনে করি। '
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
এমএইচএম/এমএমএস