ভারতের রোহিত শর্মা দ্বাদশ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন। ভারতীয় এই ওপেনার করেছেন সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান।
সাকিব জায়গা করে নেন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি ঘোষিত বিশ্বকাপের সেরা একাদশে। সেমি ফাইনালে না খেললেও সাকিবকে এই একাদশের বাইরে রাখা যায়নি। তাহলে হয়তো পূর্ণতাই পেতো না বিশ্বসেরা একাদশ। ব্যাট হাতে আট ইনিংসের সাতটিতেই ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলেছেন।
দ্বাদশ বিশ্বকাপ সাকিবকে দিয়েছে দুহাত ভরে। ৮৬.৫৭ গড়ে ৮ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬০৬ রান করেছেন সাকিব, বাঁহাতি স্পিনে নিয়েছেন ১১টি উইকেট। এক আসরে ১০ উইকেট আর ৬০০ প্লাস রান দেখেনি অন্য কোনো বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে সাকিবের নামের পাশে যোগ হয়েছে দুটি সেঞ্চুরি আর পাঁচটি ফিফটির ইনিংস। বিশ্বকাপের এক আসরে সাতটি ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলে নাম লিখিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকারের গড়া কীর্তিতে। টানা চতুর্থ বিশ্বকাপের শেষ তিনটিতেই অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থেকে খেলার অনন্য এক বিরল রেকর্ডও গড়েছেন সাকিব।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব ঢুকে গেছেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করা কিংবদন্তিদের তালিকায়। এই তালিকায় শীর্ষে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান, ওয়ানডের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি আর সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শচীন টেন্ডুলকার। আর গ্রেটদের কাতারে ঢুকে সাকিব উঠে গেছেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ৯ নম্বরে।
বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্ব ক্রিকেটকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ছিল সাকিবের নিষেধাজ্ঞা। গত অক্টোবরে সাকিবকে সবধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। দুই বছরের মধ্যে এক বছর পুরোপুরি নিষিদ্ধ, আর বাকি এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা অর্থাৎ খেলতে পারবেন কিন্তু আবারও অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে। আইসিসি’র দুর্নীতিবিরোধী আইনের তিনটি ধারা ভঙ্গ করার কথা স্বীকার করায় তাকে এই শাস্তি পেতে হয়।
দুর্নীতির প্রস্তাব পেয়েছিলেন, কিন্তু রাজি হননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জুয়াড়িদের প্রস্তাব পাওয়ার কথা আইসিসি’কে জানাননি কেন? এই দোষেই দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ঘাড়ে। আইসিসির এ ঘোষণার পরপরই রীতিমতো তুলকালাম শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। দেশ-বিদেশের কোটি কোটি সাকিবভক্ত তো বটেই, আইসিসির এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেন বহু তারকা ও সাবেক ক্রিকেটাররা। বেশিরভাগ ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতে, লঘু পাপে গুরু দণ্ড পেয়েছেন সাকিব।
সাকিবের বিরুদ্ধে যে ৩ অভিযোগ আনা হয়:
ধারা ২.৪.৪- ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের ত্রিদেশীয় সিরিজ কিংবা ২০১৮ সালের বিপিএলে দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার পরও আকসুর কাছে পুরো তথ্য প্রকাশ না করতে পারা।
ধারা ২.৪.৪- ২০১৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার পরও আকসুকে জানাতে ব্যর্থ হওয়া।
ধারা ২.৪.৪- ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলার সময় দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার কথা আকসুর কাছে প্রকাশে ব্যর্থ হওয়া।
তিনটি অভিযোগই মেনে নেন সাকিব। শাস্তি নিয়ে সাকিব আইসিসি’র সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ফের মাঠে ফিরতে পারবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেই অপেক্ষায় কোটি সাকিব ভক্ত।
বছরের শেষ দিকে সাকিবের অর্জন পুরস্কৃত হয়। উইজডেন ক্রিকেট সাময়িকী গত এক দশকের (১০ বছর) ওয়ানডে সেরা একাদশ ঘোষণা করে। ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত এই উইজডেনের প্রকাশিত একাদশটিতে নাম লেখেন সাকিব। এরপর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) দশক সেরা ওয়ানডে একাদশেও জায়গা পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯
এমআরপি